Spread the love

এসভি ডেস্ক: জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা টেস্ট জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। শুধু নমুনা সংগ্রহের অনুমতি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে তারা ভুয়া রিপোর্টও দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে এই অপকর্মের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দুই ব্যক্তি জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক (বরখাস্ত) সাবরিনা শারমিন হুসাইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এবং তার স্বামী আরিফুল।

তবে তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাতে তিনি এ কথা জানান।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, করোনা রিপোর্ট জালিয়াতির ঘটনায় তাদেরকে একাধিকবার মুখোমুখি করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ চৌধুরী ও সাবরিনা পরস্পরকে দোষারোপ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা চৌধুরী দাবি করেন, তিনি জেকেজির চেয়ারম্যান নন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীন কাগজপত্রে তার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সত্যতা পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

জেকেজির চেয়্যারম্যান সাবরীনার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুদক।

তদন্তের স্বার্থে সাবরিনাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তাই শুক্রবার (১৭ জুলাই) আবারো সাবরিনাকে রিমান্ডের জন্য আবেদন জানানো হবে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, সাবরিনার রিমান্ডের মেয়াদ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। কিন্তু তদন্তের প্রয়োজনে সাবরিনা ও আরিফকে আবারো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। তাই ডা. সাবরিনার জন্য আবারো রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

সূত্র জানায়, গত মার্চ মাসে সাবরিনা শেরেবাংলা নগর থানায় জেকেজির পক্ষে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। সে সময় ডা. সাবরিনা নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে দাবি করেন। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, হৃদরোগ হাসপাতাল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে কখনো জেকেজির সমন্বয়ক, প্রধান নির্বাহী, কিংবা প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যন বলে স্বাক্ষর বা জাহির করেন। এছাড়া জেকেজির জন্য করোনা টেস্টের অনুমোদন নেওয়া ছাড়াও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে একটি প্রকল্পের কাজও বাগিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন এই চিকিৎসক।

জেকেজি নমুনা সংগ্রহ করে কোনও পরীক্ষা না করেই ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা। তাদের কার্যালয় থেকে জব্দ ল্যাপটপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করোনা টেস্ট জালিয়াতির এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, জেকেজির করোনা টেস্টে জনপ্রতি নেওয়া হতো সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা।

প্রসঙ্গত, ২৩ জুন ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গুলশানে জেকেজি কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ১২ জুলাই ডা. সাবরিনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *