এসভি ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রায় ৪ মাস ধরে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। এই থাবায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। আয়-রোজগার কমেছে কয়েকটি মানুষের। ফলে করোনার কারণে বাংলাদেশে নতুন করে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ গরীব হয়েছে।
দেশের স্বায়ত্বশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা (বিআইডিএস) একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনার প্রভাবে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের কাতারে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শহরে আয় কমেছে ৮০ শতাংশ এবং গ্রামীণ শ্রমিকের আয় কমেছে ১০ শতাংশ।
বুধবার (২৪ জুন) বিআইডিএসের এক ওয়েবভিত্তিক সেমিনারে (ওয়েবিনার) বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘ইন দ্য শ্যাডো অব কোভিড কোপিং, অ্যাডজাস্টমেন্ট, রেসপনসেস’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো বিনায়ক সেন বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাব কাটাতে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ লকডাউন অর্থনৈতিকভাবে টেকসই নয়। এতে যেমন দারিদ্র্যের হার বেড়েছে, অন্যদিকে কোভিডের আগেই যারা দরিদ্র ছিলেন, তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
এই গবেষক আরও মনে করেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে এই ক্ষতি পূরণ করা যাবে না। বরাদ্দ বাড়িয়েও লাভ হবে না, কারণ এই ভাতা ও সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ভুল মানুষ বাছাই করার প্রবণতা আছে দেশে। ফলে যাদের দরকার, তাদের অনেকেই তালিকায় ঢুকতেই পারেন না। দেখা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন ভাতা বিতরণে অদরিদ্র ও সচ্ছল মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ, খাদ্য সহায়তার ক্ষেত্রে সেটা ৩২ শতাংশ, মাতৃত্বকালীন ভাতার ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশ, বৃত্তির ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ।’
এই পরিস্থিতিতে সরকার দারিদ্র্য হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলেও দাবি করেন বিনায়ন সেন। তিনি বলেন, ‘এতে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা অর্জন করা কঠিন হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় হ্রাসে এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে আরও সমতাভিত্তিক মডেল অনুসরণ করতে হবে।’