Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: দেবহাটায় আদালতের রায় উপেক্ষা করে সংখ্যালঘূর দোহাই দিয়ে বার বার জমি দখল ও প্রাননাশের হুমকির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদরের মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দেবহাটা প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালের ২৯জুন দেবহাটা সদরের মৃত অমূল্য রায়ের ছেলে নিমাই রায়ের কাছ থেকে দেবহাটা মৌজার এস,এ খতিয়ান নং-৬৭০, বিএস খতিয়ান ৯৭, এস,এ দাগ-৭৩৭, হাল জরিপে ১৯৮১ দাগে ২ খন্ডে ৩৫ শতক জমি ক্রয় করি। আমার জমির সাথে লাগোয়া নিমাই রায়ের ওই জমি ক্রয় পরবর্তী নাম পত্তন করে আমি ভোগ দখল করে আসছি। ক্রয়কৃত ১১ শতক জমির নাম পত্তন খতিয়ান নং ১০৫৪। এবং জমির প্রস্থ পূর্ব মাথায় ৫৪ফুট, মাঝখানে ৫৫ফুট ১০ ইঞ্চি, পশ্চিম মাথায় ৪৬ ফুট ১০ ইঞ্চি। আমার ক্রয় করা ৩৫ শতক জমি তার নিকট থেকে ক্রয় করে নামপত্তন করে দাখিলা প্রদানের মাধ্যমে ভোগ দখল করে আসছি। ক্রয় করা উক্ত জমিতে একটি আধা পাঁকা ঘর রয়েছে যেটির দাম হিসাব করে আমি ক্রয় করি। বিষয়টি ১২০৮ দলিলের ৪ পাতায় ৩নং কলমে উল্লেখ করা আছে। ঘরটি নিমাই রায়ের সাড়ে ২০ শতক জমির উত্তর ধারে লাগোয়া। অথচ সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে ২০১৭ সালে উক্ত আধা পাঁকা ঘরের সীমানায় ২০/০৮/২০১৭ তারিখে ঘরের ভিতর ঢুকে দখলের চেষ্টা চালায় নিমাই ও তার স্ত্রী শিবানী।

এবিষয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিতে দেবহাটা সহকারী জজ আদালতে আমার দলিল দেখিয়ে এবং ক্রয় করা জবরদখল ও আমাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একটি সিভিল মামলা দায়ের করি। যার নং-৩০/১৭। আমি চিরস্থায়ী দখল নিষেধ ও ডিগ্রীর জন্য মামলা দায়ের করি। পরবর্তীতে তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে নিমাই ও তার স্ত্রী শিবানী আদালতে হাজির হওয়া বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে মাহমান্য বিচারক কাগজপত্র দেখে ২০১৯ সালে আমার পক্ষে চিরস্থায়ী দখল নিষেধ ও ডিগ্রী প্রদান করেন। কিন্তু নিমাই ও শিবানী তাদের এই পরাজয় মেনে নিতে না পেরে অসাধু ব্যক্তিদের কু-পরামর্শে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পর ২ তরফা শুনানী অন্তে একটি রায় প্রদান করে আদালত। ২ তরফা সুত্রে ২৭/০২/২০২০ তারিখে নিমাই রায় ও শিবানী রায়ের বিরুদ্ধে রায় ঘোষনা দেন। রায়ে ঐ জমিতে আমাকে উচ্ছেদ, পূর্ণ দখলের বিঘ্ন সৃষ্টি করিতে না পারে সে ব্যাপারে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও ডিগ্রী দ্বারা বারিত আদেশ প্রদান করেন। বিজ্ঞ সহকারী জজ আনোয়ারুল ইসলাম এ রায়ে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু নিমাই রায় ও শিবানী রায় চিরস্থায়ী দখল নিষেধ ও ডিগ্রী ভঙ্গ করে সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে পুনরায় দখলের চেষ্টা চালাতে ঐ আধা পাঁকা ঘরে পাঁকা প্লিয়ার নির্মান শুরু করে। আমি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে দন্ডবিধি ১৫৪ ধারায় দেবহাটা থানায় একটি আবেদন করি। থানা পুলিশ বিষয়টি নোটিশ করে নির্মান কাজ বন্ধের নির্দেশ প্রদান করে। ১৬/০৪/২০২০ তারিখে থানার জিডি নং-৪২২। ইতোপূর্বে শিবানি রায় জমি মাপ জরিপ এর জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে একটি আবেদন করেন। থানা থেকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার নির্দেশ দিলে এসআই হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমার পক্ষে হাবিবুর রহমান লাচ্চু ও শিবানির পক্ষে ওমর আলী নামের ২ জন মাপ জরিপ কারক নিয়োগ করে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মাপ জরিপ হয়। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও আমার ক্রয়কৃত জমির ভিতরে তাদের কোন জমি থাকার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ওই দিনই জমির নকশা তৈরী করে পুলিশ সুপার বরাবর থানা পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেন। বর্তমানে তারা সকল আদেশ অমান্য করে আমার জমিতে ঢুকে পাঁকা প্লিয়ার নির্মান করছে। আমি বাধা দিলে জীবন নাশ ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছেন নিমাই রায় ও শিবানি রায়। ফলে আমি ০৯/০৩/২০২১ তারিখে সাতক্ষীরা সহকারি জজ আদালতে রায়ের কাগজপত্র দাখিল করে কাজ বন্ধের জন্য বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫৩৫/২১নং মামলা দায়ের করেছি।

আদালত শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে দেবহাটা থানাকে নির্দেশ দেয়। থানার এসআই শামিম হোসেন তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ প্রদান করলে আদালতের রায় উপেক্ষা করে আমার উপর হামলার চেষ্টা চালায় নিমাই, তার স্ত্রী শিবানি, ছেলে নয়ন রায় ও মেয়ে সাথী রায়। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে খুন, জখম ও শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টের সমুহ সম্ভাবনা বিরাজ করছে। তাই যাতে করে আমার মালিকানাধীন জমি থেকে প্রতিপক্ষের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং জীবনের নিরাপত্তা পেতে পারি সেজন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাহী অফিসার ও ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

By S V

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *