Spread the love

এসভি ডেস্ক: নভেল করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ বিবেচনায় সারা দেশে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত ও উপাসনার বিষয়ে নতুন করে ৬ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। একইসঙ্গে কিছু ব্যক্তি ছাড়া সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ ঘরে ইবাদত ও উপাসনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (১৯ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এসকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমরা ব্যতীত অন্য সকল মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামাজ আদায় ও জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেয়া যাচ্ছে। 

রেড জোন এলাকাগুলোর মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ ৫ ওয়াক্তের নামাজে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনধিক ৫ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরের কোনও মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। 

সেইসঙ্গে রেড জোন এলাকাগুলোতে অন্য ধর্মের অনুসারীদেরও স্ব স্ব উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশের কোথাও এখন ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগি তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, জিকির, দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এই সময়ে অন্য ধর্মের অনুসারীরাও কোনও ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না। সব ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। 

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, কোনও প্রতিষ্ঠানে সরকারি নির্দেশনা লংঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

সেখানে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ৬ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে ইবাদত বা উপাসনা করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ৬ মে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উক্ত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদসমূহে সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জামায়াতে নামাজের অনুমতি দেয়া হয়। 

কিন্তু বর্তমানে বাংলোদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্তিতি দ্রুত অবনতিশীল হচ্ছে এবং সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক করোনার চলমান ঝুঁকি বিবেচনায় দেশের যেকোনও ছোট বা বড় এলাকাকে রেড, ইয়োলো বা গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিতকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। 

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওই জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ১২ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। 

দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সকলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নতুন এই ৬ দফা নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *