Spread the love

এসভি ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর ভয়াল তাণ্ডবে যেন ভেঙেচুরে যাচ্ছে পুরো পৃথিবী। অদৃশ্য এই শত্রু বিশ্বজুড়ে প্রলয় সৃষ্টি করেছে, গুঁড়িয়ে দিচ্ছে মানবজাতির সভ্যতা ও বিজ্ঞানের দম্ভ। এখন পর্যন্ত নেই কোনো ওষুধ, প্রতিষেধকও নেই। শুধুই মৃত্যুর অপেক্ষা।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা হন্যে হয়ে চেষ্টা করছেন একটা ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরির। তবে এখনও সফলতার মুখ দেখেননি কেউ। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা তো বলেই দিয়েছেন, এসব চেষ্টাতে কোনো লাভ হবে না। অদূর ভবিষ্যতে করোনার কার্যকরি কোনো প্রতিষেধক তৈরি হওয়ার নিশ্চয়তা নেই।

তবে কোভিড-১৯ মানুষের দেহের কোথায় কোথায় ঠিক কীভাবে ক্ষতি করে, তা নিয়ে চলছে নিত্যনতুন গবেষণা। এরই মধ্যে নতুন এক গবেষণার পর স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভাইরাস শুধু মানুষের শ্বাসতন্ত্র বা ফুসফুসকেই সংক্রমিত করে না, বরং মানুষের শরীরের প্রতিটি রক্তনালিকে এই ভাইরাস আক্রমণ করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যত অচল হয়ে যায়।

সুইজারল্যান্ডের এক দল বিজ্ঞানীর বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস নিউমোনিয়ার চেয়েও মানুষের শরীরে বড় ধরনের ক্ষতি করে।

তাদের একজন ইউনিভার্সিটি হসপিটাল জুরিখের গবেষক ও হার্ট সেন্টার অ্যান্ড কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ফ্র্যাংক রাশিত্জকা বলেন, নোভেল করোনা ভাইরাস কোষের বিভিন্ন স্তরে (এন্ডোথেলিয়াম) প্রবেশ করতে পারে। এই স্তরগুলোই রক্তনালির প্রধান প্রতিরক্ষা উপাদান। ভাইরাসটি এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দেয়। ফলে ছোট ছোট শিরাতেও রক্তের প্রবাহ (মাইক্রোসার্কুলেশন) বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তখন পর্যাপ্ত রক্তের সরবরাহ থেকে বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলেই হৃৎপিণ্ড, কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে। এ কারণেই ধূমপায়ী এবং আগে থেকেই জটিল রোগে আক্রান্তরা করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর ঝুঁকিতে বেশি থাকে বলে জানান রাশিত্জকা। একই ঝুঁকিতে থাকেন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপারটেনশনের রোগীরা।

সম্প্রতি প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রটিতে ভাইরাস প্রতিরোধের একটি উপায়ও বলে দেওয়া হয়েছে। গবেষকরা মনে করছেন, ভাইরাস আক্রমণের পর এন্ডোথেলিয়াম স্থিতিশীল করার জন্য থেরাপির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবে সেটি টিকা ছাড়া অনেকটাই অসম্ভব। এছাড়া জটিল রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে রক্তনালির সক্ষমতা বাড়ানো এবং তা স্বাভাবিক রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।

অবশ্য হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক জন নিকলস বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *