Spread the love

মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জের হতদরিদ্র নারীরা পুরুষের পাশাপাশি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হবে। এক সময় নারীরা সংসারের বোঝা হলেও এখন তারা বাজারে দোকান করে হয়ে উঠছে স্বাবলম্বী। এসব হতদরিদ্র নারীরা স্বপ্ন দেখে, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের সংসার, সন্তান ও নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজের ইচ্ছেমত কেনাকাটা করবে, আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে। আত্মবিশ্বাসী করে রুপান্তরিত নেতৃত্ব তৈরি ও নারী নেতৃত্ব দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী হতদরিদ্র নারীদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। দরিদ্র নারীরা তাদের উৎপাদিত পন্য যখন পাইকারী ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রয় করে তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না ঠিক তখনি কালিগঞ্জে শহীদ ইউনুচ আলী ফুলতলা কাঁচা বাজারে মহিলা মার্কেটের দোকান, সবজি ও মৎস্য সেটের পজিশন বরাদ্দ দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী।

কুশুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ এবাদুল ইসলাম বলেন, মহিলা মার্কেটে দোকান করার মত কোনো নারী না থাকায় মার্কেটটির কিছু পজেশন এতদিন চালু করা হয়নি, কিন্তু এখন নারী ব্যবসায়ী তৈরি হওয়ায় মার্কেটিতে নারীদের জন্য দোকান বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। অনেক সদস্যই মহিলা মার্কেটে দোকান করতে আগ্রহী। তখন আগ্রহীদের তালিকা তৈরি করা হয় এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়। পরিবারের সদস্যদের মার্কেটে ব্যবসা করার সুবিধা বুঝালে তারা মহিলা মার্কেটে দোকান নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। মার্কেটিতে ৯ মার্চ বেলা ১১ টায় ১০জন নারী উদ্যোক্তার জন্য দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

দোকান বরাদ্দ পেয়ে নারী ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা অনেক খুশি কারণ দোকান করার মত কোনো নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না। এখন আমাদের ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি হয়েছে। আগে এ এলাকার কোনো নারী বাজারে দোকান করত না। আমরাই প্রথম নারী যারা বাজারে দোকান নিয়ে ব্যবসা করবো। মহিলা মার্কেটে নারীরা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হবো। এদের মধ্যে উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের নিজামউদ্দীন খাঁনের স্ত্রী বিলকিছ নাহার, একই গ্রামের মালেক হলদারের স্ত্রী ঝফুরা বেগম, শেখ আছাদুল ইসলামের স্ত্রী মাতেমা খাতুন, শেখ সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন, দুলাল বিশ্বাসের স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস, শফিউল্লাহ হাবিবীর স্ত্রী জান্নাতুন নেছা, আঃ কুদ্দুস গাজির স্ত্রী তেতা মনি, পানিয়া গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, মহৎপুর গ্রামের খাঁন জহিরুল ইসলামের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা, কাশেমপুর গ্রামের শেখ আব্দুল আমিনের স্ত্রী মাছুরা বেগম।

সদস্যরা ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিজের তহবিল থেকে দোকান নেয়ার যাবতীয় খরচ ব্যয় করবেন এবং ব্যবসার ধরন অনুযায়ী পুঁজি বিনিয়োগ করবেন।

এব্যাপারে নারী উদ্যোক্তা আনোয়ারা বেগমের স্বামী মাহবুবুর রহমান বলেন, আগ্রহী হয়ে কেনাকাটার জন্য মহিলারা মার্কেটে আসবে। নারীরা মার্কেটে দোকান করতে আসলে তাদের পারিবারিক কাজের চাপ যেন না হয় সেজন্য পরিবারের স্বামীসহ অন্যান্য সদস্যরা পরিবারের রান্নাসহ যাবতীয় কাজ ভাগাভাগি করবে এবং তাদের ব্যবসা করতে উৎসাহিত করবে। নারীরা সহজেই দোকানে এসে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, মহিলা মার্কেটটি উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতে কমিটির মাধ্যমে মার্কেটের পাশে আরো নারীদের ব্যবসা করার জন্য দোকান তৈরি করে দিব। নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ায় পাশাপশি এলাকার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মার্কেটগুলোতে যদি হতদরিদ্র নারীদের হস্থান্তর করতে পারলে নারীরা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *