Spread the love

ফিরোজ জোয়ার্দ্দার: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় দশ লাখ টাকা নিয়ে আগে থেকে প্রার্থীর কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিয়ে গোপনে একজন পরিদর্শক (শুন্য পদে) নিয়োগের অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী প্রার্থীরা।

শুক্রবার (২১ ই ডিসেম্বর) সকালে পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর আওতাধীন (ইউসিসিএ-শুন্যপদ) পরিদর্শক পদে কলারোয়া বিআরডিবি’র হল রুমে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা থাকায় গোপনে নিয়োগের বিষয়টি প্রকাশ হলে অনিবার্য কারণ বসত সেটা স্থাগিত করা দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী প্রার্থীরা নাম না বলার শর্তে কয়েকজন জানান, (৪৭.৬২.৮৭৪৩.১০০.১২.০৬৬.১৭.১১৫৩ স্মরক নং ইউসিসিএ পরিদর্শক (শুন্য পদে) একজন নিয়োগ দেয়া হবে। একজনের বিপরীতে ১৩ জন প্রার্থী পত্রিকার বিঞ্জপ্তি দেখে নিয়ম মাফিক যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করেন। আবেদন করা প্রার্থীদের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে বলা হয় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। সেই মোতাবেক বিভিন্ন প্রার্থীরা কাগজপত্র সঠিক করে চলে আসেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার অফিসে। এসে শুনতে পান তারা আগে থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তরিকুল ইসলাম নামের এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হবে। এই খবর শুনে হতাশ আবেদনকারী বাকী প্রার্থী (বিত্তে গোল চিহ্ন তরিকুল ইসলাম) নামের ওই প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে। পাশে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে আছেন কয়েকজন মেধাবী প্রার্থীরা।

মেধাবী প্রার্থীদের সুযোগ না দিয়ে উর্দ্ধৃতন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে মন গড়া ভূয়া নিয়োগ বোর্ড তৈরী করে মেধাবীদের সাথে প্রতারনা করা হচ্ছে বলে মনে করেন প্রার্থীর প্রতিনিধিরা।

প্রকৃতপক্ষে সঠিক মেধাবীদের মূল্য না দিয়ে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হলে প্রকৃত মেধারীরা হবে বঞ্চিত। যদি টাকার বিনিময়ে আগে থেকে নিয়োগ বোর্ড তৈরী করে প্রার্থী সিলেকশন করা হয় তাহলে লোক দেখানে নিয়োগ বোর্ডের কি দরকার।

তাছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রার্থীর একজন প্রতিনিধি বলেন, যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ না দিয় যদি ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে পরিদর্শক (শূন্য পদে) নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে তিনি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে নিয়োগ নিতে আগ্রহী প্রকাশ করেন প্রতিবেদকের কাছে। টাকার বিনিময়ে যোগ্য প্রার্থীরা হারিয়ে ফেলছে তাদের মেধা ও যোগ্যতা। নিয়োগ নিতে যদি টাকার দরকার হয় তাহলে লোক দেখানো নিয়োগ বোর্ডের কি দরকার। নিয়োগে আগ্রহী প্রার্থীরাসহ প্রর্থীর প্রতিনিধিরা নিয়োগ কমিটির কাছে সঠিক নিয়মে নিয়োগ দেয়ার কথা বললে, আগে থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেয়া আমলারা ক্ষেপে যান। তর্ক- বিতর্কের মধ্যে উত্তজিত প্রার্থীরা নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থানে এসে উত্তেজিত জনতা ও নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে পরিবেশ শান্ত রাখেন। সঠিক ধারায় নিয়ম মাফিক পরিদর্শক (শুন্য পদে) নিয়োগ বোর্ড হবে, এখানে টাকা বা কোন অপশক্তির স্থান নেই। সকল প্রার্থীরা লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আত্মীয়করনের কোন সুযোগ থাকবে না। যে প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে যোগ্য হবেন, তাকেই নিয়োগ দেয়া হবে। সুতারাং দশ লাখ টাকায় বিনিময়ে বা আত্মীয়করণ করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের সত্যতা যাচায় করে তদন্তে প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে আপাতত নিয়োগ বোর্ড বা লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার সকল কার্যক্রম স্থগিত করে হলো। নিয়োগ বোর্ড স্থাগিত করার ঘোষনা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজের মুখ থেকে শুনে প্রার্থীরাসহ উত্তেজিত প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থান ত্যাগ করেন। তাছাড়া কবে নিয়োগ বোর্ড বা পরীক্ষা হবে সে বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ তৎক্ষণিক কিছু জানাননি।

এব্যাপারে বিআরডিপি’র চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বাবু সাথে কথা হলে তিনি বলেন, টাকা দিয়ে নিয়োগ বোর্ড বা প্রশ্ন পত্র ফাঁসের ঘটনা শুধুমাত্র গুজব। তাছাড়া উত্তেজিত জনতার চাপে পড়ে নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ নিয়োগ বোর্ড স্থাগিত করে দেছেন এখানে তাদের কিছু করার নেই। নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করার নোটিশ পল্লী উন্নয়ন কর্কমর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ পদোন্নতি কমিটির সদস্য সচিব সন্দীপ কুমার মন্ডল অফিসের নোটিশ বোর্ডে নিয়োগ স্থাগিতকরণ নোটিশ টাঙিয়ে দেন।