Spread the love

নাজমুল শাহাদাৎ (জাকির): সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ী ইউনিয়নে এক দরিদ্র বিধবার বসত বাড়ি জবর-দখল করার উদ্দেশ্যে ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার ভোরবেলা আগরদাড়ী ইউনিয়নের নেবাখালি এলাকায় এ ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ঘটনাটি ঘটে।

সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে হোসেন আলী, শাহিন হোসেন, তফুরা খাতুন, রেবেকা খাতুন সহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরবেলা নেবাখালি গ্রামের মৃত. সৌরব হোসেনের ছেলে মাহবুব হোসেন, মৃত. জামাল উদ্দীনের ছেলে আব্দুল জলিল, আঃ সাত্তার, আঃ জব্বার, আঃ খলিল, আঃ জলিলের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, জাকির হোসেন, আলমগীর হোসেন, আঃ জব্বারের ছেলে আল-আমিন, মাহবুব হোসেনের ছেলে ইকরামুল হোসেন, সাত্তারের ছেলে ইব্রাহীম হোসেন সহ অজ্ঞাত ১০/১৫জন ব্যক্তি দা, কুড়াল, লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রাধী সহ বিধবা সখিনা বেগমের বসত বাড়িতে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করতে থাকে। পরবর্তীতে তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসতে থাকলে তারা পালিয়ে যায়।

এসময় তারা জানান, নেবাখালি গ্রামের মৃত. মোসলেম আলীর স্ত্রী সখিনা বেগমের সাথে একই এলাকার মৃত. জামাল উদ্দীনের ছেলে চিহ্নিত ভ’মিদস্যু, ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল, আঃ সাত্তার, আঃ জব্বার ও আঃ খলিলদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসতেছিলো। এবিষয়ে বহুবার সালিশী মিমাংসার মাধ্যমে সমাধান করা হলেও ক্ষমতার দাপটে আঃ জলিলরা কোনকিছু তোয়াক্কা না করে বিধবা সখিনা বেগমের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে তার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেয়। শুধু সখিনা বেগম নয়, তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ আমরা। তবে তারা খুব হিংস্র প্রকৃতির ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হওয়ায় তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস নাই আমাদের।

এ ব্যাপারে বিধবা সখিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের কিছু আগে তাকে আটকিয়ে রেখে জামালউদ্দীনের ছেলেরা ও তাদের ডাকাত বাহিনী তার বসত বাড়ি মূহুর্তের মধ্যে ভেঙ্গে দেয়। ঘেরের মাছ বিক্রয় করা ৪০ হাজার টাকা সহ প্রায় লক্ষধিক টাকার আসবাবপত্র ও সোনার গহনা নিয়ে চলে যায়।

এসময় তিনি আরো জানান, তার স্বামী ( বর্তমানে মৃত) মোসলেম আলী একই এলাকার জামাল উদ্দীনের কাছ থেকে ১৯৯০ সালে দুই শতক জমি ক্রয় করে। সেইথেকে তারা জমিটির ভোগ দখলে ছিলো। তবে ২০১০ সালে একই জমি জামালউদ্দীন তার সন্তানদের নামে লিখে দেন। এবিষয়ে তারা কোন সালিশী সিদ্ধান্ত না মানার কারনে তার স্বামী ২০১১ সালে সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাত বছর পর ধরে বিচার চলার পর জমিটি আমাদের বলে রায় দেয় আদালত। এসময় আদালতের রায় পেয়ে আমরা সেখানে ঘরবাড়ি করলে তারা আমাদের উপর নানা ভাবে নির্যাতন করতে থাকে মৃত. জামাল উদ্দীনের ছেলেরা। তাদের নির্যাতনের কারনে আমার স্বামী মারা গেছে।

এসময় তিনি জানান, গ্রাম্যে ও থানার সালিশনামা এবং কোর্ট রায়কে না মেনে তারা এর আগেও আমাদের বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাত করেছে। ঐসময় একটি এজাহার দায়ের করেছিলাম তাদের বিরুদ্ধে। তবে থানা পুলিশকে বাঁ-পকেটে রেখে তারা বুক ফুলিয়ে চলে বেড়াচ্ছে, তাদের বেড়ানো দেখে মনে হয় দেশে সুশাসন নাই রয়েছে টাকার শাসন। এবিষয়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস, এম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যেখানে আদালত রায় ও থানার সালিশী নামাকে মানা হচ্ছেনা সেখানে আমাদের কী করার থাকে? আদালত ও থানার রায় পাওয়ার পরে সদর থানার পুলিশের উপস্থিতে আমরা সেখানে ঘর তৈরী করে দেয়। ঘর তৈরী করে দেওয়ার পরেও তাদের ঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এবিষয়ে ভুক্তভ’গি পরিবার এজাহার দায়ের করলেও আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। একারনে তিনি বিধবার বসতবাড়ি রক্ষার জন্য পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।