নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কাজলা বাজারে নিবন্ধনবিহীন আছিয়া ডাক্তারখানা পাইলস এন্ড পলিপাস চিকিৎসালয়ে পাইলস, অর্শ, জুখা, ভগন্দর, পলিপাস, নালী, মলদ্বারে রক্ত পড়া, পুঁজ পড়া, মলদ্বারে যন্ত্রণা রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে বিজ্ঞাপন দিয়ে রোগীদের সঙ্গে নিয়মিত প্রতারণা করছেন শেখ মনিরুজ্জামান (মনি)।
বিনা অপারেশনে অর্শ, নাকের পলিপাস চিকিৎসা ও ফিজিও থেরাপির নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন বড় অঙ্কের অর্থ। এমনকি চিকিৎসা নেওয়ার পর একই সমস্যা বড় আকার ধারণ করছে। এ ছাড়াও নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
সরেজমিনে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার কাজলা বাজারে অবস্থিত হওয়ায় আছিয়া ডাক্তারখানায় প্রতারিত হয়েছেন হাজারো রোগী। ইতঃপূর্বে তার নিজ গ্রাম কালিগঞ্জ উপজেলার কাজলা কাশিবাটী গ্রামে অবৈধ অনৈতিক কাজে গ্রামের লোকজন তাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন। চিকিৎসা করা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া অশ্ব পায়ুপথের রোগ তাই অনেকেই গোপনে চিকিৎসা নেন। এরই সুযোগ নিয়েছেন মনিরুজ্জামান মনি। নিয়মিত ওষুধ সেবন করে মানুষ প্রতিনিয়ত আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিপিটি সার্টিফিকেট না থাকলেও ফিজিও থেরাপি দিচ্ছে। কিন্তু প্রতারণা করে মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলা এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। তাই গ্রামের সাধারণ ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করারও সাহস করে না। এ ছাড়াও পাইলস্ এন্ড পলিপাস চিকিৎসালয়ের সাইনবোর্ডের আড়ালে মাদক সেবন ও বিক্রির গুঞ্জনও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিগঞ্জ উপজেলার কাশিবাটী গ্রামের পাইলস রোগী বলেন, আমার পাইলসের সমস্যা নিয়ে কাজলা বাজারের আছিয়া ডাক্তারখানা পাইলস এন্ড পলিপাস্ চিকিৎসালয়ের ডা. শেখ মনিরুজ্জামানের কাছে গেলে তিনি ওষুধ দিয়ে অপারেশন ছাড়াই চিকিৎসার কথা বলেন। আমিও তার কাছে চিকিৎসা নিয়েছি কিন্তু সমস্যা ঠিক হয়নি বরং বেড়েছে। তেতুলিয়া গ্রামের রাকিবুল হোসেন বলেন, পাইলসের জন্য চিকিৎসা নিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। প্রথমে কিছুদিন ভালো ছিলাম তারপর আবারও একই সমস্যা। নলতা গ্রামের এক কৃষক বলেন, আমার মেয়ের পলিপাসের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ভালো হয়নি, প্রতিবেশী এক ভাইয়ের ছেলেরও সারেনি এখন আমরা সাতক্ষীরা তে চিকিৎসা করাবো। একই অভিযোগ কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের এক গৃহবধূর।
এ বিষয়ে শেখ মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আমি সব ধরনের রোগীর জিবি প্রেক্টিস করি। ডাক্তার লিখতে পারি না, আগে লিখতাম এখন আর ডাক্তার লিখি না। সব ধরনের রোগের চিকিৎসা করি তবে নিয়মের মধ্যে অশ্ব ও পাইলসের চিকিৎসা করাতে পারি না। বিপিটি সার্টিফিকেট নেই, অন্য একজনকে দিয়ে থেরাপি দেয়। শতভাগ নিয়ম মেনে কাজ করা সম্ভব হয় না। আপনি নিউজ করলে লোকে আমাকে বেশি করে চিনবে। তাতে আমার কিছু হবে না।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল কবির বলেন, তিনি সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হিসেবে পলিপাস, অর্শের চিকিৎসা করতে পারেন না। এবং নামের আগে ডা. লিখতে পারবেন না। আছিয়া ডাক্তারখানা পাইলস এন্ড পলিপাস চিকিৎসালয় সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে আমি এটার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।