Spread the love

এসভি ডেস্ক: নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ও সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী শারমিন জাহানের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

শনিবার (২৫ জুলাই) ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুল ইসলামের আদালত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের করা এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। 

এর আগে শনিবার সকালে ৩ দিনের রিমান্ড চেয়ে শারমিনকে আদালতে পাঠানো হয় বলে জানান ডিবির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে শারমিন জাহানকে গ্রেফতার করে ডিবি রমনা বিভাগ।

রাতেই গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি আজিমুল হক জানান, শারমিন জাহানকে গ্রেফতারের পর শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ডিবি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহবাগ থানায় অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে মাস্ক জালিয়াতির ঘটনায় বিএসএমএমইউর প্রক্টর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় একটি মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোনও কোনও ফেইস মাস্কের বন্ধনী ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো ইংরেজিতে লেখা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ পাওয়া গেছে। এ ধরনের ত্রুটিতে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে, মাস্ক নিম্নমানের ছিল। এর ফলে কোভিড-১৯  সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারতো।

ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার রাতে শারমিনকে শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। করোনা মহামারিতে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউয়ের রোগীদের চিকিৎসার জন্য নকল এন-৯৫ মাস্ক দিয়েছে অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।

এর আগে মাস্ক জালিয়াতির ঘটনায় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করে জবাব দেন প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহান।

অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, নকল মাস্ক সরবরাহ করার কোনো ইচ্ছে তাদের ছিল না। তাদের কাছে যেভাবে প্যাকেটজাত অবস্থায় মাস্কগুলো এসেছে, সেভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর পরই তারা সেসব মাস্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত শারমিনের মালিকানাধীন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল গত ২৭ জুন ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ পায়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর শারমিন ২০০২ সালে ছাত্রলীগের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে কোনো পদ না পেলেও দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত।

শারমিন ২০১৬ সালের ৩০ জুন স্কলারশিপ নিয়ে চীনের উহানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে উহানে লকডাউন শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তার শিক্ষা ছুটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। এর মধ্যে চীনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের মার্চে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে মাস্ক সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

গ্রেফতার হওয়ার আগে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগের বিষয়ে শারমিন জাহান বলেন, ‘আমরা নকল মাস্ক সরবরাহ করিনি। এসব প্রোডাক্ট চীন থেকে ইম্পোর্টেড। এগুলোতো আমরা তৈরি করিনি। আমরা শুধু সাপ্লাই দিচ্ছি। প্রডাক্ট খারাপ হলে, বিএসএমএমইউ প্রথমবারই আমাদের বলতে পারত। আমরা সেটা যাচাই করে দেখতে পারতাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *