Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি:  তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় দু:স্থদের মাঝে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবে বেসরকারি সংস্থা সুশীলন। যেখানে প্রতি পরিবারের জন্য নগদ ৩ হাজার টাকা, ১০টি ১২৫ গ্রামের সাবান, কাপড় ধোয়া ডিটারজেন্ট পাউডার ২০০ গ্রামের ৫ প্যাকেট, মগ ১টি, স্যানিটারি ন্যাপকিন ৮ পিস কাপড় (সাইজ), হাত ধোয়ার জন্য ট্যাপযুক্ত বালতি (২০ লিটার) এবং মাস্ক ৫০টি বিতরণ করবে সুশীলন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়,গরিব, দু:স্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করার কথা থাকলেও ইউপি সদস্য মো. আব্দুস সামাদ সরদারের স্বজনপ্রীতির কারণে ত্রাণ বিতরণের তালিকায় দেখা যায় নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সামাদ সরদারের স্ত্রীর মোছাঃ কুলসুম খাতুনসহ এলাকার বৃত্তবানদের নাম। সেই তালিকায় দেখা যায় মো. শাহিন হোসেন নামের উঠতি বয়সী এক যুবকের নাম। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ওই যুবক নগরঘাটা ইউপির গ্রাম পুলিশ সদস্য মো. সবুর গাইনের ছেলে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা সুশীলনের ৪নং ওয়ার্ডের ত্রাণের তালিকায় প্রথমে দেখা যায় মিঠাবাড়ী শেখপাড়া গ্রামের মৃত: সামছুর রহমানের ছেলে মো. মীর কাসীমের নাম। মীর কাসীমের পাকা প্রাচীর দেওয়া বাড়ি, তার পারিবারিক অবস্থা ভালো ঘূর্ণিঝড়ে তার কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

মিঠাবাড়ী মন্দিপাড়া গ্রামের আমজেদ আলীর ছেলে মো. আব্দুর রহিমের নামও আছে উক্ত তালিকায়। মো. আব্দুর রহিম মন্দিপাড়ার বৃত্তবানদের একজন। তাদেরও পাকা বাড়ি, আছে অনেক জায়গা জমি। ঘূর্ণিঝড়ে তার কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা যায়। তারপরেও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়দের তালিকায় তার নাম দেখা যায়।

মিঠাবাড়ী মন্দিপাড়া গ্রামের মৃত. আবুল খায়েরের ছেলে মো. আবু সেলিমের নামও দেখা যায় ওই তালিকায়। আবু সেলিমের পারিবারিক অবস্থা ভালো, তার মায়ের বিধবা ভাতার কার্ড আছে, কিছুদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নগদ ২৫০০ টাকা অর্থ সহায়তা পেয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসও লাগেনি তার। তারপরেও উক্ত তালিকায় তার নাম কিভাবে গেলে জনমনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

উক্ত তালিকায় দেখা যায় গ্রাম পুলিশ আব্দুস সবুর গাইনের ছেলে শাহিনের নাম। শাহিন একজন উঠতি বয়সী যুবক তার নাম উক্ত তালিকায় গেলো কি করে?গ্রাম পুলিশ আব্দুস সবুর গাইন নিজের নাম দিতে না পেরে তার ছেলের নাম দিয়েছে। সবুর গাইনের পাকা বাড়ি।

মিঠাবাড়ী মন্দিপাড়া গ্রামের ইয়াকুব আলী সরদারের ছেলে ইউসুফকেও দেখা যায় উক্ত তালিকায়। ইউসুফ এলাকার বৃত্তবানদের একজন। তার পাকা বাড়ি সহ অনেক জায়গা জমি আছে।

সুশীলন ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় দু:স্থদের ত্রাণের তালিকায় ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ সরদারের স্ত্রী মোছাঃ কুলসুম খাতুনের নাম। ইউপি সদস্য সামাদ সরদার তার নিজের নামে ত্রাণ নিতে না পেরে তার স্ত্রীর নাম দিয়েছে ত্রাণের তালিকায়।

৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদের স্বজনপ্রীতির কারণে অসহায় দু:স্থদের ত্রাণ পাচ্ছে বৃত্তবানরা। এভাবে প্রায় সব নাম ইউপি সদস্য তার নিজের লোকদের দিয়েছে গরিব,অসহায়দের বাদ রেখে।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. আব্দুস সামাদ তার স্ত্রীর নাম আছে স্বীকার করে বলেন, বোঝেন তো আমাদের কিছু খরচ-খরচা আছে। এগুলো পাবো কোথায়?  এছাড়া তিনি আরো বলেন এলাকায় যারা পাইনি তাদের তালিকায় নাম দিয়েছি।হয়তো কিছু ব্যক্তি দুইবার করে পেয়ে থাকতে পারে।  বৃত্তবানরা এ তালিকায় নাম কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে মোবাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, শেখ হাসিনার নির্দেশ ধনী-গরিব সবাই যেনো সহযোগিতা পায় সেজন্য দিয়েছি। এছাড়া সুশীলন কর্মকর্তারা ফিল্ডে এসে প্রত্যেকের ছবিও তুলে নিয়ে গেছে।

ত্রাণে অনিয়মের ব্যাপারে সুশীলন এনজিওর কর্মকর্তা প্রশান্ত মিত্র জানান, করোনাভাইরাসের কারনে আসলে আমাদের যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমরা কে গরিব কে ধনী সেটা জানিনা। প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছবি তুলে তালিকা যাচাই করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি উদ্ধর্তন কর্মকর্তার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে দেখছি। প্রয়োজনে আবার যাচাই করা হবে।

অসহায়দের ত্রাণ যদি গবির -অসহায়রা না পেয়ে মেম্বারের স্ত্রীর পায় তাহলে শেখ হাসিনার সোনার স্বপ্নের বাংলা বাস্তবায়ন বাঁধাগ্রস্ত হবে। উন্নয়নের জন্য যেখানে আওয়ামীলীগ সরকার বদ্ধ পরিকর। অন্যায় -দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স সেখানে মেম্বারের এরকম কাজে এলাকায় জনমনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে গবির,দু:স্থরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অধিকার থেকে। এলাকায় অনেক অসহায় হতদরিদ্র পরিবার আছে যারা এখনও কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *