Spread the love

জিএম জাকির হোসেন:

নোভেল করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সারা দেশে ব্যবসা বানিজ্য, দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বাড়ির বাইরে যেতে পারছেনা কেউ। ফলে কাজও বন্ধ। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া মানুষগুলো। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এনজিওগুলোকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে।

তবে জেলা প্রশাসকের কথায় কোনরুপ ভ্রূক্ষেপ করছেনা কিছু কিছু এনজিও। তাদের কর্মীরা কিস্তি আদায় করতে বাড়িতে যাচ্ছেন। টাকা না দিলে গালাগালিসহ বিভিন্ন প্রকার বাজে কথা বলছেন। এমনকি সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে কটুক্তিও করতে দ্বিধা করছেন না ওই এনজিও কর্মীরা। 

বুধবার সকালে সাতক্ষীরা সদরের খানপুর গ্রামে জমিদারী স্টাইলে বসে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় করছেন সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা(সাস) এর ফিল্ড কর্মী সুব্রত সরকার। কিস্তি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ওই সকল ঋণ গ্রহীতাদের আজেবাজে কথাও বলেছেন তিনি। এমনকি জেলা প্রশাসককে নিয়ে কটুক্তিও করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

খানপুর গ্রামের আজমল হোসেন, আছাদুল ইসলাম, জাকির হোসেনসহ অনেকেই বলেন, আজ সাসের ফিল্ড কর্মকর্তা সুব্রত সরকার কিস্তির জন্য আসে। আমাদের কাজ নেই। আমাদের পক্ষে এখন কিস্তির টাকা দেওয়া সম্ভব না বলে তাকে জানায়। তারপরেও যদি আপনারা আমাদের উপর চাপ দেন তাহলে আমরা যাবো কোথায়? যেখানে দু-মুঠো ভাতের জন্যে হাহাকার করছি সেখানে কিস্তির টাকা পাবো কোথায়! তাছাড়া আমাদের কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসক স্যার ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্যে বলেছেন বলে শুনেছি।

একথা বলার পরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে সুব্রত সরকার বলেন, জেলা প্রশাসক থাকে চেয়ারে বইসা, উনি ফিল্ডের জ্বালা কী বুঝবে? আমরা ফিল্ডে থাকি আমাদের জ্বালা নিয়ে। টাকা দিতে পারবেন না তাহলে লোন নিছিলেন কেন? জেলা প্রশাসকতো আমাদের টাকা দিবেনা যে আমরা তার কথামত চলবো। 

এরপর আমরা সাসের ম্যানেজারের কন্টাক নাম্বার চাইলেও ফিল্ড কর্মকর্তা সুব্রত সরকার দেননি। তিনি ম্যানেজারের কথামতো এখানে এসেছেন বলে জানান।

সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা(সাস) এর ফিল্ড কর্মী সুব্রত সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কোন নির্দেশনা আসেনি। জেলা প্রশাসক, সরকার এমনকি আমাদের এনজিও অফিস থেকে এখনো কোন নির্দেশনা আসেনি। আমাদের কাজ টাকা আদায় করা, আমরা সেটা করছি। নির্দেশনা আসলে বন্ধ করে দেবো বলে তাদের বলেছিলাম।

এদিকে জেলা প্রশাসককে নিয়ে কটুক্তির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি ওই কথাগুলো বলেছিলেন।

সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা(সাস) এর ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, এধরণের কথা কখনো কোন ফিল্ড কর্মকর্তা বলেন না। তবে ঘটনার প্রমাণ রয়েছে বলে জানালে তিনি পরবর্তীতে ফোন দিয়ে বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *