Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে নতুন পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তবে সাতক্ষীরা সীমান্তের চোরাইপথ ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক বাংলাদেশী নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসছেন বলে জানা গেছে। বিজিবি ও বিএসএফের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও অবৈধভাবে পারাপার করার কাজে নিয়োজিত কিছু দালাল। তারা বেশি টাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করাচ্ছেনা।

সাতক্ষীরা সদরের বৈকারী সীমান্ত এলাকা থেকে কলারোয়া উপজেলার মাদরা সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি। হেঁটে টহল দিচ্ছেন বিজিবি সদস্যরা। কোন প্রকার অবৈধ পারাপার করতে দিচ্ছেন না তারা। আবার বিজিবি সদস্যদেরকে নজরদারীতে রেখেছেন সাতক্ষীরার বৈকারী, কালিয়ানী, কুশখালী, তলুইগাছা, কেড়াগাছী, ভাদিয়ালীর একদল দালালরা। বিশেষ করে কেড়াগাছী থেকে গয়ড়া পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত সোনাই নদী দ্বারা বিভক্ত ফলে ওই এলাকাটাই বেশি ব্যবহার করছেন ওই কৌশলী দালালরা।

তাছাড়া দালালরা বাংলাদেশী নাগরিকদেরর সীমান্তের নিকটের ঝোপ ও জঙ্গলে লুকিয়ে রাখছেন। একটু সুযোগ পেলেই তারা ভারতের দালালের সাথে যোগাযোগ করে ৫/৬ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশী নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করাচ্ছেন। বিশেষ করে দুপুরে, সন্ধার পর ও ভোরের সময়টাকে ব্যবহার করছেন তারা।

কালিয়ানী সীমান্তে এমন এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয়। সংবাদকর্মী পরিচয় গোপন করে ভারতে যাওয়া-আসার পদ্ধতিটা কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কোনো ব্যাপার নয়। আমি ওইসবের কাজ করি। যেতে হলে ছয় হাজার টাকা লাগবে। আবার ফিরতে গেলেও ছয় হাজার হলেই হবে। কোনো প্রকার বিজিবি বা বিএসএফের বাধার মুখে পড়তে হবে না। সুযোগ পেলেই পারাপার করে দেবো।

এদিকে চোরাইপথে বাংলাদেশী নাগরিকরা ভারত হতে বাংলদেশে প্রবেশ করায় আতঙ্কে দিন পার করছে সীমান্ত পাড়ের নাগরিকরা। সেই চিত্র ফুটে উঠলো কুশখালী উন্নয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মুখে।

তিনি বলেন, কোন পরীক্ষা ছাড়াই ভারত হতে বাংলাদেশী নাগরিক প্রবেশ করায় আমরা বেশ আতঙ্কিত। নাজানি কে করোনা ভাইরাস শরীরে নিয়ে প্রবেশ করছেন!

সাতক্ষীরার কালিয়ানী সীমান্ত এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজিবি সদস্য বলেন, বর্তমানে আমাদের ডিউটির সময় বাড়ানো হয়েছে। কালিয়ানী সীমান্ত এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দিনে আমরা চারজন ডিউটি করছি, রাতে করবে ৮ জন।

করোনা প্রতিরোধে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে নতুন করে কোন বাংলাদেশী অথবা কোন ভারতীয় যাতায়াত করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ফলে ভারতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশী নাগরিকরা সাতক্ষীররা সীমান্তের চোরাইপথ ব্যবহার করছেন।

সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক গোলাম মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খন্দকার বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সীমান্ত এলাকাগুলোতে টহল দ্বিগুণ করা হয়েছে। বিশেষ টহল, রুটিন টহল ছাড়াও চোরাচালান রোধে টহল রয়েছে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তবে আমাদের যেটুকু জনবল রয়েছে সেটুকুরই সর্বোচ্চ ব্যবহার করছি। ভারত থেকে অবৈধভাবে কারও প্রবেশের সুযোগ নেই জানিয়ে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, বিজিবির নজরদারির মধ্যে চোরাইপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *