শেখ রিজাউল ইসলাম: ছাদের পলেস্তারা খসে বেরিয়ে এসেছে রড। কার্নিশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ফাটল। আর পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে সবসময়। আর সেই জীর্ণশীর্ণ ভবনের নিচে শুয়ে আছে রোগীরা। রীতিমতো ছাদ আতঙ্ক নিয়েই এখানে ভর্তি হচ্ছেন তারা।
বুধবার(১১ মার্চ) সরেজিমনে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যেয়ে দেখা গেছে, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড ২ ও পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ড ২ এর ছাদের পলেস্তারা ধসে গেছে। কোথাও কোথাও পলেস্তারা ধসে রড বেরিয়ে গেছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা বিরাজ করছে ওয়ার্ডে প্রবেশ মুখে। সেখানের ছাদের বিমে বড় বড় ফাঁটলের সৃষ্টি হয়েছে। পলেস্তারার সাথে রড দেখা যাচ্ছে। আর রডে জং ধরে রডও খসে খসে পড়ছে।
জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার প্রায় সাড়ে ২২ লাখ মানুষের জন্য এই হাসপাতালটির এই ভবন নির্মাণ করা হয় অনেক আগে। কয়েক বছর আগে সেই পুরাতন ভবনের উপর তৈরী করা হয় নতুন ভবন।
পরবর্তীতে মাঝেমধ্যে ওই পুরাতন ভবনের সিলিং এর খসে পড়া জায়গায় নামমাত্র সংস্কার করা হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
প্রতিনিয়ত মনের ভেতর আতঙ্ক বিরাজ করে উল্লেখ করে পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ড ২ এ চিকিৎসাধীন শহরের মিলবাজার এলাকার নাজমুল ইসলাম সাতক্ষীরা ভিশনকে বলেন, আঙুলের সমস্যার কারণে আমি এখানে ভর্তি হয়েছি। আমার মাথার উপরের সাদের সিলিং ফেঁটে গেছে। হঠাৎ ওখানে চোখ পড়লেই গা ছমছম করে। কখন না জানি রানা প্লাজার মতো দূর্ঘটনা ঘটে এই আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে সবসময়।
সদরের তলুইগাছা এলাকা হতে চিকিৎসা নিতে আসা আমির আলী সাতক্ষীরা ভিশনকে বলেন, মানুষ চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসে। কিন্তু উল্টো হাসপাতালে এসে যদি দূর্ঘটনার শিকার হতে হয় তবে, সে হাসপাতালের দরকার কী?
পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে ছেলেকে ভর্তি করানো বাউকোলা গ্রামের শওকত আলী সাতক্ষীরা ভিশনকে বলেন, ছেলে মারাত্মক অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু তার জন্য নির্ধারিত বেডের ওপরের ছাদে ধ্বস নামায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।
ওয়ার্ডে প্রবেশ মুখে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড আব্দুর রহিম সাতক্ষীরা ভিশনকে বলেন, আমার মাথার উপরে পলেস্তারা ধসে রড বেরিয়ে গেছে। বিমে ফাঁটল দেখা যাচ্ছে। আমি খুব আতঙ্ক নিয়ে এখানে ডিউটি করছি। যে কোন সময় ছাদ ধ্বসে রানা প্লাজার মতো দূর্ঘটনা পারে। আমি বড় সাহেবদের এ ব্যাপারে বলেছিলাম। তারা বলেছেন অতি দ্রুত ওই ছাদ ও বিম সংস্কার করা হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হোসাইন সাফায়াত সাতক্ষীরা ভিশনকে বলেন, মাত্র কয়েক মাস আগে আমি এখানের দায়িত্ব পেয়েছি। সদর হাসপাতালের ওই ভবনের জীর্ণশীর্ণ অবস্থার ব্যাপারে আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। ওই ভবন সংস্কারের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কার করা হবে।