Spread the love

এসভি ডেস্ক: কাদা-পানি না শুকিয়েই খনন করা হচ্ছে সাতক্ষীরার প্রাণ সায়র খাল। এরফলে গুণগত মান বজায় রেখে খনন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খাল খনন করতে পাশ্ববর্তী শক্ত মাটি কেটে মেশিন চলাচলের পথ তৈরী করা হচ্ছে। পরে কাদা-মাটি দিয়ে ঐ পথ ভরাট করে খালের পাড় লেবেল করা হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ স্থানেই পাড়ের ঐ মাটি ধ্বসে পুনরায় খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, খালের দু’পাড়ের শক্ত মাটি কেটে স্কেভেটর মেশিন চলাচলের পথ তৈরী করা হচ্ছে। তারপর ঐ মেশিন দিয়ে পানির নিচ থেকে নেলকাদা তুলে খনন কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। পরে স্কেভেটর মেশিন চলাচলের পথ কাদা-মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে এবং মেশিন দিয়ে দু’পাড়ের লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। শক্ত মাটি কেটে স্কেভেটর মেশিন চলাচলের পথ তৈরী করায় অধিকাংশ স্থানেই মাটি দুর্বল হয়ে খননকৃত খালের মধ্যেই তা ভেঙে পড়ছে। পরে তার উপর আবার কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে লেভেল করা হলেও অধিকাংশস্থানে তা টিকছে না। ফলে খনন কাজের মান মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।

সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাতক্ষীরা প্রাণ সায়র খাল খনন তদারক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী নাজমুল করিম বলেন, পানি শুকিয়ে প্রাণ সায়র খাল খনন করার কথা। কিন্তু তা না করা হলে গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব হবে না।

এদিকে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সোমবার শহরতলীর কৈখালী এলাকায় খনন কাজ পরিদর্শন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবলু, সদস্য ও উন্নয়ন কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত প্রমুখ।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাগরিক নেতৃবৃন্দ খালের খনন কাজ পরিদর্শন করেন এবং অভিযোগের সত্যতা পান।

উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-১ এর অধীন ‘৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (১ম পর্যায়) এর আওতায় প্রাণ-সায়ের খাল খনন করা হচ্ছে। 
সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম ব্রীজ হতে খেজুরডাঙ্গা ৬ ভেন্ট স্লুইস গেটস্থ বেতনা নদীর সংযোগস্থল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকা খননের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা চুক্তি কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই অংশে খননকৃত মাটির পরিমাণ ৯৩ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৯ দশমিক ৯০ সিএফটি।

আর দ্বিতীয় অংশে ১ দশমিক ০৮০ কিলোমিটারে রয়েছে খেজুরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে খেজুরডাঙ্গা ৬ (ছয়) ভেন্ট স্লুইস গেট পর্যন্ত।

এ অংশে খননকৃত মাটির পরিমাণ ১৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪২৮ দশমিক ৬৯ সিএফটি।অপর গ্রুপে চরবালিথা হতে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম ব্রীজ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার পুনঃখননের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৮ দশমিক ৪১ লক্ষ টাকা চুক্তি মূল্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। এই অংশে খননকৃত মাটির পরিমাণ ১ কোটি ৫১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ দশমিক ৩৫ সিএফটি।টেন্ডার অনুযায়ী খালটির ডিজাইন দুই ভাগে বিভক্ত। যার প্রথম অংশে চরবালিথা হতে কুখরালী দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ পর্যন্তখনন করা হবে। এই অংশে খননকৃত মাটির পরিমান ৮৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬৮ দশমিক ৪৯ সিএফটি।

আর দ্বিতীয় অংশে কুখরালী দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ হতে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম ব্রীজ পর্যন্ত। এই অংশে খননকৃত মাটির পরিমান ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৮২৮ দশমিক ৮৬ সিএফটি।

এই অংশের ইটাগাছা পূর্বপাড়া হতে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম ব্রীজ পর্যন্ত খননকৃত ৪৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪৬ দশমিক ১৬ সিএফটি মাটি ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে শহরের মধ্য থেকে নিরাপদ দূরত্বে স্থানান্তর করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *