মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ: পূর্ব আকাশে কুয়াশা ঢাকা ম্লান মুখ আর সকালে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীতের আগমনকে বরণ করে নেয়ার সময় হয়ে এসেছে। শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে আকাশে বাতাশে। দিনে গরমের সঙ্গে সঙ্গে সন্ধ্যার শুরুতে পড়তে শুরু করেছে হালকা কুয়াশা। পরদিন সকাল ৭/৮টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকছে।
শীতের আগমনীতে লেপ-তোষকের কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শীতের আগমনী বার্তায় হালকা পাতলা কাপড় ছেড়ে দিয়ে শীতের ভারি কাপড় গায়ে জড়িয়ে বের হচ্ছেন অনেকেই। এদিকে শীতকে সামনে রেখে অনেকেই পুরনো শীত বস্ত্র তুলে রেখেছেন সেগুলো বের করছেন। কেউ কেউ আবার নতুন করে লেপ-তোষক তৈরি করছেন। তাই মনে করিয়ে দিচ্ছে বছর ঘুরে শীত আবার দুয়ারে এশে কড়া নাড়ছে। গ্রামের নারীরা সংসারের কাজের ফাঁকে পুরনো লেপ কাঁথাগুলো নতুন করে ছেঁড়া শাড়ি-লুঙ্গি দিয়ে জোড়া তালি দিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার জন্য কিছুটা ব্যস্ততা দেখা গেছে।
সরেজমিনে উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের পানিয়া, নরগরকাটি, রানিতলা এলাকার লেপ-তোষক তৈরির কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি লেপ ও তোষক তৈরিতে ৫-৬ কেজি তুলা ব্যবহার করা হয়। আকার ভেদে ৫শ’ থেকে দুই হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। একটি তোষক তৈরি করতে ৮-১৫ কেজি তুলা লাগে, বিক্রি হয় ৬শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। একটি জাজিম তৈরিতে ৩০-৫০ কেজি তুলা ও নারিকেলের খোসা প্রয়োজন হয়। আকার ভেদে তা বিক্রি হয় ১৫শ’ থেকে চার হাজার টাকায়।
উপজেলার ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের অন্যান্য সময় মাসে ২-৪ জন তোষক কিনতে আসলেও লেপের চাহিদা একেবারেই থাকে না। শীতের শুরু থেকে অন্তত চারটি মাস লেপ-তোষক বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে লেপ। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয়। পানিয়া গ্রামের কারিগর মিলন গাজি জানান, শীতের সময় কাজের চাপ থাকে। গড়ে প্রতিদিন একজন কারিগর ৩-৪টি লেপ-তোষক তৈরি করতে পারেন।
তিনি আরো জানান, গত শীতের তুলনায় বিভিন্ন প্রকার তুলা ও কাপড়ের দাম অনেক বেড়েছে। এ কারণে প্রতিটি লেপ-তোষকে আকার ভেদে ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা বেশি খরচ পরছে। সরকার যদি আমাদের মত এই সব ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের বিনা সুধে লোনের ব্যবস্তা করতেন তাহলে আমরা ব্যবসা আরো বড় করে করতে পারতাম।