Spread the love

এসভি ডেস্ক: আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন। এটি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৪৮ বছর আগের এই দিনে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশবাসীকে। সে ঘোষণার আলোকেই মরণপণ লড়াই এবং রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন– স্বাধীনতা।

জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে।

দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সরকারি ছুটির দিন। এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। সকালে জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে। রাজধানীর বিশেষ বিশেষ ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

দিনটিতে সমগ্র জাতি অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার স্মৃতিতে উদ্বেলিত হয়ে বাঁধভাঙা প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠবে। ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ দেশের সব স্মৃতির মিনার। হৃদয়পটে সৃষ্ট গভীর ক্ষত থেকে ভেসে উঠবে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম’ পংক্তিমালার মর্মার্থ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর সন্তানদের স্মৃতির প্রতি আজ বিনম্র শ্রদ্ধা জানাবে জাতি। শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতাদের এবং গণহত্যার শিকার লাখো মানুষ ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।

সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দুশো বছরের ব্রিটিশ-বেনিয়া শাসনের অবসানের পর ২৪ বছর ধরে চলে বিজাতীয় ভাষাভাষী গোষ্ঠীর শাসন-শোষণ ও আগ্রাসন। ’৪৭-এর দেশভাগের পর উর্দু শাসকদের নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রামের চেতনার উন্মেষ ঘটতে থাকে। মাতৃভাষার দাবিতে  ’৪৮ সাল থেকে শুরু করে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তদান, সংগ্রাম-আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে রায়, ’৫৬-তে এসে সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বীকৃতি আদায়, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফার মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তিসনদ ঘোষণা, ’৬৯-এর ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের বিদায় এবং ’৭০-এ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারাবাহিকতায়ই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসেছে স্বপ্নের স্বাধীনতা।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং  বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

দিনটি উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে– আজ সূর্যোদয়ের মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। এছাড়া টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে সকাল ১০টায় শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনায় অংশ নেবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা।