Spread the love

সোহরাব হোসেন সৌরভ: সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার ঐতিহাসিক রায় আজ বৃহস্পতিবার। সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির এই রায় ঘোষণা করবেন।

এদিকে ওই মামলায় ইতিমধ্যে কারাগারে আছেন তালা-কলারোয়া আসনের সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জন। এছাড়া পলাতক আছেন ১৫ জন।

সাতক্ষীরা জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) আব্দুল লতিফ বলেন, ২০ জন স্বাক্ষীর বক্তব্য ও উপযুক্ত তথ্য প্রমাণাদি আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি। আশা করছি আদালত আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করবেন।
অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল বলেন, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনভাবেই আসামীদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামী খালাস পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষণের শিকার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কলারোয়ায় পৌঁছালে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফাতেমা জামান সাথী, আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল এবং শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। একইসময় সাতক্ষীরার বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন।

ওই ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে ২৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। ওই মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়।

তখন তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টর এ্যাড. আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের ৫০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ও ৩০ জনকে সাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।

এরপর সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামিপক্ষের আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। ওই মামলায় ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর সর্বশেষ আর্গুমেন্টের দিন সকল আসামীদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠায় আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *