Spread the love

এসভি ডেস্ক: যশোরের মণিরামপুরের ইত্যা ঋষিপল্লিতে ভিক্ষুক দম্পতির তরুণী দুই মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, ইত্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কলোনি পাড়ার আবু দাউদ (৫০) নামে এক কবিরাজ ঝাড়ফুঁকের নাম করে ওই বাড়িতে গিয়ে দুই বোনকে (১৭ ও ১৩ বছর) ধর্ষণের চেষ্টা করে।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটলেও সন্ধ্যার পর তা প্রকাশ পায়। রাতেই স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা চলে। পরে শালিসে দুই পক্ষ হয়ে যাওয়ায় ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।

খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ দুই মেয়েসহ ভিক্ষুক দম্পতিকে থানায় নিয়ে আসে।

অভিযুক্ত আবু দাউদ যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ঘুনি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। দীর্ঘদিন তিনি ইত্যা গ্রামে শ্বশুর আব্দুল আজিজের বাড়িতে ঘরজামাই থাকেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। তার দুই ছেলে বিদেশে থাকেন।

এই ঘটনায় রোববার (১৮ অক্টোবর) সকালে থানায় মামলা করেছেন দুই তরুণীর মা। তবে ঘটনাটি নিয়ে বাদি ও দুই তরুণী ভিন্নভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।

বাদি বলেন, আমার চার মেয়ে। বড় মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। ছোট তিন মেয়ে বাড়ি থাকে। আমার মেঝ মেয়ে অসুস্থ। শনিবার সকালে আমরা স্বামী-স্ত্রী ভিক্ষা করতে বের হই। এরপর বেলা ১১টার দিকে দাউদ কবিরাজ আমাদের বাড়ি যায়। তারপর সেঝ মেয়ের হাতে দশ টাকা দিয়ে তাকে দোকানে খাবার আনতে পাঠায় কবিরাজ। সেই সুযোগে মেঝ মেয়েকে ঝাড়ফুঁক দেওয়ার কথা বলে ঘরে নিয়ে মুখ বেঁধে খারাপ কাজ করে সে। সেঝ মেয়ে দোকান থেকে ফিরে তার বোনের মুখ বাধা দেখে কবিরাজকে বকাঝকা করে। তখন কবিরাজ তারও গায়ে হাত দেয়।

তবে ভুক্তভোগী দুই তরুণীর মধ্যে বড়জন বলেন, কবিরাজ আমার মুখ বেঁধে গায়ে হাত দেয়। পরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন আমি তাকে লাথি মেরে ফেলে দিই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নিখিল দাস বলেন, বিকেলে ভিক্ষুক দম্পতি বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানতে পারে। এরপর তারা আমার কাছে এসে ঘটনাটি খুলে বলে। আমি সাথে সাথে ঘটনাটি চেয়ারম্যানকে জানাই।

ঝাড়ফুঁক দিতে দাউদ আগেও ওই বাড়িতে যাতায়াত করতেন বলে জানান মেম্বর নিখিল।

কাশিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার আগে মেম্বর আমাকে বিষয়টি জানায়। তখন দাউদকে ধরতে আমি দফাদারসহ গ্রাম পুলিশদের সেখানে পাঠাই। তারা যেয়ে দাউদকে বাড়িতে পাইনি। তার আগেই সে পালিয়েছে। পরে রাত তিনটার দিকে জানতে পারি ভুক্তভোগী পরিবারকে থানা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।

তবে দাউদের পরিবারসহ তার বাড়ির আশপাশের নারীদের দাবি, কবিরাজ ভালো মানুষ। তিনি এই কাজ করতে পারেন না। স্থানীয়রা বলছেন, ভিক্ষুকের মেঝ মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। আগে তার একটা বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর বাড়ি থাকতে পারেনি। এখন তার পায়ে শিকল লাগিয়ে বাবা-মা ভিক্ষা করতে যায়।

মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছি। কবিরাজ ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় থানায় ধর্ষণ চেষ্টায় মামলা করেছেন দুই তরুণীর মা। অভিযুক্ত দাউদ কবিরাজ পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

By S V

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *