জিএম জাকির হুসাইন: চায়ের দোকানে কথাকাটাকাটিকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরায় এক যুবকলীগ নেতার বাম হাতের চারটি আঙুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
গত বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা পৌরসভার ইটাগাছা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই যুবলীগ নেতার নাম মুজাহিদুর রহমান (অন্ত)। তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ-সম্পাদক ও ইটাগাছা এলাকার আবুল হাসানের ছেলে।
মুজাহিদুর রহমান অন্ত’র বাবা আবুল হাসান জানান, গত বুধবার (১৬ই সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা পৌরসভার বাকাঁল এলাকায় অবস্থিত রোজ মার্কেটের এক চায়ের দোকানের বিল পরিশোধকে কেন্দ্র করে আমার ছেলের সাথে সাতক্ষীরা পৌরসভার ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াজউদ্দীনের ছেলে ও ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ হোসেন, একই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে ও ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ-সম্পাদক জাহিদ হোসেন এবং পুরাতন সাতক্ষীরার বাবু তালুকদারের ছেলে সোহেল রানার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আমার ছেলে চায়ের বিল বাবদ দোকানদারকে ২০ টাকা পরিশোধ করে ওখান থেকে চলে আসে।
ওই দিন দুপুরে আমার ছেলে প্রয়োজনীয় কাছে শহরের উদ্দেশ্য রওনা দিলে নাহিদ, জাহিদ, রানাসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন ধারালো অস্ত্রহাতে অন্ত’র পথরোধ করে এবং এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করতে থাকে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে অন্তর বাম হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে যায়।
এ সময় স্থানীয়রা দ্রুত এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের নাহিদসহ তার সন্ত্রাসীবাহিনী পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় মুজাহিদুর রহমান অন্তকে দ্রুত উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তবে হাত থেকে আঙুলের হাড় পুরোপুরি ভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে অন্তর বাবা জানান।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সাতক্ষীরার বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক সাদিকুর রহমানের দেহরক্ষী হিসেবে জেলাব্যাপী পরিচিত নাহিদ হোসেন ও জাহিদ হোসেন।
সাদিকের ছত্রছায়ায় থেকে তারা (নাহিদ-জাহিদ বাহিনী) বিভিন্ন সময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। তারা একের পর এক অপকর্ম করলেও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে পার পেয়ে যায় তারা। বিতর্কিত নানা কর্মকান্ডে ছাত্রলীগ নেতা সাদিকুর রহমান দল থেকে বহিঃস্কার হওয়ার পাশাপাশি গ্রেফতার হলে দীর্ঘদিন যাবৎ আত্মগোপনে ছিলেন অভিযুক্ত এসমস্ত ছাত্রলীগের নেতারা। তবে সময়ের পরিক্রমায় পুনরায় তারা জেলার বিভিন্ন জায়গায় আবারো সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে। যুবলীগ নেতার হাতের আঙুল কাটার ঘটনায় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
সাতক্ষীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, যুবলীগ নেতার হাতের আঙুল কেটে নেওয়ার ঘটনায় একটি লিখিত এজাহার পেয়েছি। দ্রুত সময়ের ভিতরে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।