Spread the love

শেখ রিজাউল ইসলাম (বাবলু): করোনা ভাইরাস সংক্রামণ রোধে যখন সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ রাখা হয়েছে সকল ধরনের কার্যক্রম। একই সাথে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনাও রয়েছে। ঠিক তখনি প্রশাসনের এ নির্দেশনা না মেনে সাতক্ষীরা সদরের শাল্যেস্থ বেতনা নদীর চর অবৈধ ভাবে দখলে নিয়ে পৃথা ব্রিক্স এর মালিক পারভেজ এর বিরুদ্ধে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে।

সসরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যস্ত থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্যে স্কেবেটর দিয়ে শাল্যেস্থ বেতনা নদীর চরের মাটি কেটে নিজের পৃথা ব্রিক্সে নিয়ে যাচ্ছে ভাটা মালিক পারভেজ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইটভাটার মালিক পারভেজ গেইট বন্ধ করে দিয়ে ভাটার ভেতর শ্রমিকদের দিয়ে ইট পোড়াচ্ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শতাধিক শ্রমিকের সমাগম করে চালানো হয় ইট তৈরির কাজ বলে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়। তাছাড়া সেখানে শ্রমিকদের মাঝে শারীরিক দূরত্ব ও নিরাপত্তা মাক্স বা স্যানেটাইজার ব্যবস্থা নেই। এতে করোনা সংক্রামণের ঝুঁকিতে রয়েছে শ্রমিকরা। এতে ক্ষুব্ধ এলাকার সচেতন মানুষ।

আরও জানা যায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরায়ও গত (২৫মার্চ) বুধবার জেলা প্রশাাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সকল মানুষকে প্রয়োজন ব্যতীত বাইরে ঘোরাঘুরি না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। একই সাথে সকল মানুষ ঘরের মধ্যে অবস্থান করলেও ইটভাটা শ্রমিকরা তা মানছেন না। অথচ প্রশাসনের এ নির্দেশনার কর্ণপাত করছেন না পৃথা ব্রিক্সের মালিক পারভেজও। এছাড়াও ঋণগ্রস্থ শ্রমিকদের চাপ সৃষ্টি করে পারভেজ আজও চালাচ্ছেন ইটভাটার কার্যক্রম।

স্থানীয়রা জানান, অধিক লাভের আশায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা মানছেন না ইটভাটার মালিক পারভেজ। ইট তৈরির কাজে আগেই ৬ মাসের অগ্রিম শ্রম কিনে নেন ভাটা মালিক। এজন্য মালিকদের কাছে জিম্মি শ্রমিকরাও। শ্রমিকদের টাকা ফেরত দেয়ার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক কাজ আদায় করে নেন তারা। স্যানেটাইজার কোন সচেতনাতামূলক সামগ্রী দেয়া হয় না।

ইটভাটা শ্রমিক স্কেভিটর চালক রাজু জানান, ভাটা মালিকের কাছ থেকে ৬ মাসের অগ্রিম টাকা নিয়েছি। ভাটায় স্কেবেটর এর কাজ করে মজুরি পরিশোধ করার চেষ্টা করছি মাত্র। কাজ না করলে অগ্রিম টাকা ফেরত দিতে হবে। এতে মারধরসহ নির্যাতিত হতে হয় আমাদের। এততোগুলো টাকা ফেরত দেয়ার সামর্থ এখন আমার নেই। তাছাড়া করোনা সম্পর্কে তাদের মালিক পক্ষ থেকেও কোন কিছু বলা হয়নি।

পৃথা ব্রিক্স এর মালিক পারভেজ জানান, সরকারের নির্দেশনা থাকলেও বন্ধ করা সম্ভব নয়। এতে অনেক টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এখন কাজ বন্ধ রাখলে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা ইটভাটায় ছড়াবে না।

পাওবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, বেতনা নদীর চরের মাটি কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বদিউজ্জামান (সার্বিক) বলেন, সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে প্রয়োজন ব্যতীত মানুষকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনের নিতিমালা মেনে চলবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ইটভাটা বন্ধের ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। তিনি আরও বলেন, নদীর চর দখল করে মাটি কাটা আইনগত অপরাধ। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন কাজের প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *