Spread the love

ফারুক হোসেন রাজ, কলারোয়া: স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর প্রশাসনের অবহেলায় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে চলছে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাক্স কাঁচা বাজারের কার্যক্রম। এ অবস্থায় বারবার সংস্কার এবং পরিচ্ছন্নতার দাবি জানিয়েও কোনো সুরহা পাননি ব্যবসায়ীরা। ফলে অস্বাস্থ্যকর, দুর্গন্ধময় ও দূষিত পরিবেশে চলছে ১৪টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় কেনা-বেঁচা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁচা বাজারটির ভেতের ও চারপাশে ময়লার স্তুপ জমে আছে। আর সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে বাজারের পরিবেশ দূষিত করছে। সেই সঙ্গে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের চিহ্ন রয়েছে ময়লার স্তুপে। মেরামতের অভাবে অধিকাংশ হাটচালির টিন সেড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি হাটচালির ধ্বংসের পথে যার নিচে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেনা-বেচা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে মাছ ব্যবসায়ী মুনছুর আলী জানান, প্রতি সপ্তাহের তিনটি হাটে খাজনা দিচ্ছি, ঝাড়ুদারকে টাকা দিচ্ছি, তবুও সংস্কার ও পরিষ্কার করার কেউ নেই। নিরুপায় হয়ে পঁচা সবজি, মলমূত্র ও মাদদ্রব্যের দুর্গন্ধের মধ্যে বসে বেচা-কেনা করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই অসুস্থত হয়ে পড়েছি। সংশ্লিষ্ট সবাইকে বার-বার অবহিত করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

তরকারি ব্যবসায়ী কওসার আলী গাইন বলেন, এখানে ব্যবসা করার মতো পরিবেশ নেই। সামনে বর্ষাকাল বৃষ্টিতে ভিজে কেনা-বেচা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মাথার ওপরে কিছুই নেই। নাম মাত্র হাটচালিতে ব্যবসা করছি। অথচ ঠিকাদাররা প্রতি হাটে খাজনা নিয়ে যাচ্ছে। ঝড় বৃষ্টিতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে কেনা বেচা করছি। এটি দ্রুত সংস্কার না হলে ব্যবসাই হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আতিয়ার বলেন, শত বছরের পুরাতন (ঢবঢবীর ) বাজারই হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্রজেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীর নামানুসারে বর্তমান ব্রজবাক্স হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। ১২০ বছর আগে থেকেই সপ্তাহে তিন দিন (রবি,মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার) এই বাজারে প্রচুর মানুষের আনাগোনায় হয়।

এই বাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলা ১৩৫০ সালে ১৪টি গ্রামের মানুষের সমন্বয়ে (ঢবঢবির) বাজারকে স্থান্তরিত ও নাম পরিবর্তন করে বর্তমান ব্রজবাক্স বাজার রাখা হয়। এতগুলো সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের আনাগোনা বাজারটিতে কিন্তু নোংরা পরিবেশের জন্য ভয়ংকর সব রোগ-ব্যাধির সম্মুখীন হচ্ছে।

স্থানীয় হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়য়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, বাজারের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের বিষয়টি আসলে দুঃখজনক এবং আমি লজ্জিত। কিন্তু উপজেলা থেকে বাজার উন্নয়নের জন্য ১০ শতাংশ বরাদ্দ পাওয়ার কথা থাকলেও বিগত তিন বছর ধরে পাচ্ছি না, যা উপজেলা নির্বাহী অফিসে আটকে আছে। বর্তমান ও আগের নির্বাহী কর্মকর্তাকে বার বার জানানোর পরেও কোনো বরাদ্দ বা ফল পায়নি। যে কারণে উন্নয়নের কাজটি করতে পারছি না।

তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে (নির্বাহী অফিসারকে) অবগত করে দু-এক দিনের মধ্য সংস্কার করার ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, বাজারের বিষয়টি চেয়ারম্যান আমাকে অবহিত করেনি। যতদ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সংস্কারের ব্যবস্থা করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *