Spread the love

এসভি ডেস্ক: কুয়াকাটার খানাবাদ কলেজ এলাকার এক বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রী মরিয়ম (১৫) কে হত্যার পর লাশ গুমের ১৫ দিনের মাথায় নাটকীয় ভাবে তাকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।  

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মইনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার মুগদা থানার মদিনা বাগের খালপাড় রোডস্থ রুনা ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টে কর্মরত অবস্থায় ৫ অক্টোবর রাতে কথিত লাশ গুমের পরিকল্পনাকারী ও আত্মগোপনকারী মরিয়মকে উদ্ধার করা হয়েছে। মরিয়মের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার পরিবার এক খালাতো ভাইয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেবার আয়োজন করায় পালাতেই নিজেকে হত্যাকাণ্ডের নাটক সাজায় মরিয়ম। ঘটনার রাতে বাড়ির একটি সাদা রংয়ের রাজাহাস জবাই করে তার বুকের দুই টুকরো মাংশ রক্ত ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং পায়ের নূপুর ও অন্যান্য আলামত ঘরের মেজেতে রেখেই ঢাকার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায় মরিয়ম। ১৯ সেপ্টেম্বর ভোররাতে এসব পরিকল্পনা সবার অজান্তে সম্পাদন করে। এরপর সকালে কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজ সংলগ্ন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলীপুরে হয়ে বাসযোগে প্রথমে কলাপাড়া পৌঁছায় মরিয়ম। ওইদিন সকাল ৮টার দিকে কলাপাড়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনে ঢাকায় গিয়ে নিজেই গার্মেন্টন্সে কাজ খুঁজে নেয়। 

উদ্ধার হওয়া মরিয়মকে আদালতে সোপর্দ করার কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মরিয়ম এতই ধূর্ত যে, কারও সহায়তা ছাড়াই সে এই চাঞ্চল্যকর এবং দুঃসাহসিক পরিকল্পনা একাই সম্পন্ন করেছে।  

জানা গেছে, মহিপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে মায়ের পাশে ঘুমায়। সকালে তার মা নুরজাহান বেগম মেয়েকে না দেখে খুঁজতে বের হতেই ঘরের মেজেতে বিভিন্ন আলামত দেখতে পায়। ঘরে ছোপছোপ রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরো মাংস, রক্তমাখা দুটি ছুরি পড়ে আছে মেজেতে। সবাই ধারনা করে, মরিয়মকে হত্যার পর তার লাশ গুম করা হয়েছে। এ ঘটনার পরদিন মহিপুর থানা পুলিশ মা’কে বাদী বানিয়ে একটি হত্যা মামলা গ্রহন করে। ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী ঘটনায় সাংবাদিকদের পাশাপাশি পুলিশও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এর সর্বশেষ কিনারা হয় মরিয়মকে উদ্ধার এবং পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিংয়ের মধ্য দিয়ে।