Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সিঙ্গাপুর প্রবাসী স্বামী মজনুর রহমানকে তালাকের ৩ দিনপর ৫ বছর বয়সী মেয়েকে ফেলে এসে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ইয়াছিন আলী(২৫)কে বিয়ে করেছেন সুরাইয়া খাতুন(২১)। বর্তমানে সুরাইয়া খাতুন কলেজ পড়ুয়া স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। ওই ঘটনায় প্রবাসী মজনুর রহমানের মামা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ৬ বছর আগে সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের বিহারীনগর গ্রামের সিংগাপুর প্রবাসী মজনুর রহমানের সাথে কলারোয়া উপজেলার বাকসা গ্রামের ইলিয়াস রহমানের মেয়ে  স্ত্রী সুরাইয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই তাদের এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করে।তিন জনের সংসার মোটামুটি ভালই চলছিল। তবে সংসারে আরো একটু স্বচ্ছলতা ফেরাতে ১৩ মাস পূর্বে সিঙ্গাপুরে গমন করেন মজনুর রহমান। সুন্দরী স্ত্রীর মনবাসনা পূর্ণ করতে প্রতিমাসে স্ত্রীকে পাঠাতেন মোটা অংকের টাকা। তবে স্বামী বিদেশ যাওয়ার সুযোগে পুরাতন প্রেমিক সাতক্ষীরা সদরের কামার বায়সা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে ও ঝাউডাঙ্গা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইয়াছিনের সাথে আবারো যোগাযোগ করেন এবং পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।এরপর থেকে ইয়াছিন মাঝে মাঝে লোক চক্ষুর আড়ালে বিহারীনগর গ্রামে যাতায়াত করতেন। তবে সুরাইয়া খাতুন ও ইয়াছিনের প্রেমের সম্পর্কটা আর গোপন থাকেনি। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিহারী নগর গ্রামে। এক পর্যায়ে লোক লজ্জার ভয়ে ৩/৪ মাস পূর্বে সুরাইয়া খাতুন মেয়েকে নিয়ে চলে যান হঠাৎগঞ্জ ইউনিয়নের বাকসা গ্রামে।তবে সেখানেও যাতায়াত শুরু করে ইয়াছিন। বিষয়টি জানতে পেরে বিগড়ে বসে সুরাইয়ার মা হাসিনা বেগম।মেয়েকে ফেরাতে শুরু করেন বকাঝোকা। একপর্যায়ে মায়ের সাথে ঝগড়া করে শিশু কন্যাকে রেখেই গত ১৫ মার্চ চলে আসেন ইয়াছিনের বাড়ীতে। জানাজানি হলে সে সময় সুরাইয়াকে ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় মেম্বারসহ গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তি ও সুরাইয়ার বাবা ইলিয়াসকে সাথে নিয়ে কামার বায়সা গ্রামের আব্দুল মাজেদের বাড়ীতে যান মামা শ্বশুর বিহারীনগরের আলমগীর হোসেন। এসময় মজনুকে তালাক দেওয়ার কথা জানান এবং কাগজও দেখান সুরাইয়া খাতুন।ছোট মেয়ের এখন কি হবে গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের এমন পশ্নে তখন সুরাইয়া খাতুন বলেন, যার মেয়ে তার কাছে থাকবে। আমি মেয়েকে নেয় কি করবো?এরপর সুরাইয়া খাতুন বিগড়ে বসেন এবং তাকে বিয়ে করতে চাপ প্রয়োগ করেন ইয়াছিনকে। এক পর্যায়ে ওই দিনই সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর এলাকার  আলোচিত কাজী রওশন আলমের স্বাক্ষরিত কাবিননামা অনুয়ায়ী ইয়াছিন ও সুরাইয়া খাতুন বিয়ে করেন।

এদিকে বিয়ের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ইয়াছিন ও সুরাইয়া খাতুন ধূলিহরে যেয়ে কাজির অফিস থেকে বিয়ে করেছন বলে কাবিননামায় উল্লেখ আছে। তবে ধূলিহর এলাকার অনেই বলছেন, ওই কাবিননাময় কাজী রওশন আলমের সিল সহি থাকলেও ওই কাজী গত ৫ মার্চ পবিত্র ওমরা করতে সৌদিআরব গমন করেছেন এবং তিনি ফিরবেন আগামী ১৪ মার্চ। কাজী রওশন আলমের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতী করে ভূয়া কাবিননামা তৈরী করেছেন বড় ইয়াছিন।

সরেজমিনে সুরাইয়া খাতুন তার নতুন স্বামীর বাড়ীতে থাকাকালে জানান, পূর্বের স্বামী মজনুর বয়স বেশি। বুড়োর সাথে মা বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে আমার জীবন টা নষ্ট করে দিয়েছে। তাছাড়া মজনু আমাকে শারিরিক নির্যাতন, ভরণপোষন না দেয়াসহ মানসিক নির্যাতন করতো। তাই আমি আমার বন্ধুর বাড়ীতে এসে উঠেছি এবং আমার কষ্টের কথা শুনে ইয়াছিন আমাকে বিয়ে করেছে।

ইয়াছিনের মা জানান, আমরা অসহায় মেয়েটিকে আশ্রয় দিয়ে বরং ভালো কাজ করেছি।

তবে বিহারীনগর এলাকার বাসিন্দারা জানান, একজন মেয়ে মানুষ স্বামীকে তালাক দেয়ার ৯০ দিন আগে নতুন স্বামী গ্রহণ করতে পারে না। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক ৯০ দিন ইদ্দত পালন শেষে তালাক কার্যকর হয়। এই আইনগত বিধান মেনে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু সুরাইয়া খাতুন মজনুকে তালাক দেওয়ার ৩ দিন পর ইয়াছিনকে বিয়ে করেছে। সুতরাং তাদের এই বিয়ে বৈধ না। এখন যদি তারা শারিরীক সম্পর্ক করে তবে সেটা ব্যাভিচারে পরিণত হবে।আর এই সময়ে যদি সুরাইয়া গর্ভবতী হয়ে পড়ে তবে সেই সন্তান হবে অবৈধ। আমাদের মনে হয় ওই বিয়েটাও একটা নাটক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *