নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরের বিকে (বৈকারী কুশখালী) ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ক্লিনার ও কাথন্ডা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
গত ১৩ মার্চ সকালে ওই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওহিদ উদ্দীন। তবে ওই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর বিষয়টি জানতে পেরে ফুঁসে উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গেলে ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, গত ১৩ মার্চ বুধবার সকালে আমাদের বান্ধবী স্কুলে এসে দ্বিতীয়তলার দক্ষিণ পাশে আমাদের ক্লাসে প্রবেশ করে। এসময় তরিকুল ভাই ক্লাসে প্রবেশ করে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে অশোভন করে।
১০ম শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তরিকুল ভাই যখন তখন মেয়েদের কমন রুমে প্রবেশ করে ব্যাগ চেক করেন। ব্যাগে খাবার থাকলে সেগুলো বের করে খান। টাকা থাকলে সেই টাকা নিয়ে চলে যান। আমাদের কোন বান্ধবী বা ছোট বোন একটু সেজেগুজে আসলে তাদের বিভিন্নভাবে কটুক্তি করেন। এছাড়া তিনি অনেক ম্যাডামকে নিয়েও কটুক্তি করেন।
ওই বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য তুহিন হোসেন বলেন, ‘স্কুলের গেটম্যান শরিফ আমাকে বলে, ‘আমি স্কুলে এসে তরিকুলকে না পেয়ে স্কুলের সিসি ক্যামেরায় দেখি তরিকুল দ্বোতলায় উঠে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করছে।’ শরিফের কথামতো আমি স্কুলে যেয়ে শুনি প্রধান শিক্ষক সাতক্ষীরায় প্রশিক্ষণে গেছেন। তখন আমি শিক্ষক তোতাবুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তরিকুল ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তবে তরিকুল প্রধান শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে মুচুলিকা দিয়েছে।’ তখন আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন স্কুলে উপস্থিত হলে সকলে সামনে তরিকুল তার অপরাধের কথা স্বীকার করে এবারের মতো ক্ষমা করে দিতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, এতো বড় একটি ঘটনা ঘটার পরও প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির কাউকে কিছু বলেননি। তিনি বড় অংকের টাকা নিয়ে গোপনে গোপনে তরিকুলের কাছ থেকে মুচলিকা নিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এচাড়া তিনি ওই ছাত্রীর বাড়ি যেয়েও হুমকি দিয়ে এসেছেন বিষয়টি আর কাওকে না বলার জন্য। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চায়। যদি তরিকুলকে শাস্তি দেওয়া না হয় তবে এর পরেও সে এর চেয়ে বড় অপরাধ করবে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওহিদ উদ্দীন বলেন, ‘তরিকুল ওই ছাত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করেছে এমন একটি তথ্য আমার কাছে আসলে আমি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তখন সে তার অপরাধ স্বীকার করে ভবিষৎ এ আর কারো সাথে খারাপ আচরণ করবেনা বলে লিখিত দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য অভিযুক্ত তরিকুল ইসলামের কাছে মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বৈকারী কুশখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ওই ঘটনা জানার পর তরিকুলকে শোকজ করার জন্য প্রধান শিক্ষক নির্দেশ দিয়েছি। শোকজের জবাব সন্তোসজনক না হলে তরিকুলকে সাসপেন্ড করা হবে।’