Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের দয়ারঘাট থেকে বলাবাড়িয়া গ্রামের একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং খোলপেটুয়া নদীর তীরে টেকসই নদী রক্ষা বাঁধের দাবি এলাবাসির। রোববার (১৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় এই দাবিতে বলাবাড়িয়াগামী অস্থায়ী সড়কে গ্রামবাসী একটি মানববন্ধন করে।

অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে দক্ষিণ বলাবাড়িয়া, উত্তর বলাবাড়িয়া, হাসখালি গ্রামের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ ২৯ বছর বলাবাড়িয়া গ্রামের সঙ্গে আশাশুনি সদরের স্থায়ী কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। দীর্ঘদিন এ এলাকার মানুষ মৎস্য ঘেরের রিং বেড়িবাঁধ তাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। এতে জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে এ এলাকার মানুষের ভাগ্যে নেমে আসে করুণ দশা। নদীর জোয়ারে দেখা দেয় জলোচ্ছ্বাস। সে কারণে চলতি মৌসুমে জলোচ্ছ্বাস রোধকল্পে ও বলাবাড়িয়া গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এনডিআর এর মাধ্যমে মাটির বেড়িবাঁধ রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এতেই বাঁধা সৃষ্টি করতে তৎপর হয়ে ওঠে একটি মহল। এমনকি এই মহলের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কাজ বন্ধ করার জন্য লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে বাঁধের কাজ বন্ধ না করে দ্রুত কাজ শেষ করে হাজার হাজার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন সাধন করতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থী পূরবী রানী মন্ডল বলেন, বর্ষার দিনে কাদামাটি মেখে অতি কষ্টে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।

একই গ্রামের গৃহবধূ মিতা মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা (রাস্তা) না থাকায় সুপেয় খাবার পানি, পণ্য পরিবহন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে জরুরী অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত আমরা।

স্থানীয় নিমাই চন্দ্র মন্ডল বলেন, ভালো কাজ করতে গেলেই বাঁধাবিঘ্ন থাকবেই। তাই সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে জনগণের স্বার্থে নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা অতি জরুরী।

ইউপি চেয়ারম্যান এসএম হোসেনুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এনডিআর ও জরুরী সেবা খাত থেকে রিং বেড়িবাঁধের স্থলে মাটির বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি থেকে আশাশুনি সদর ইউনিয়নসহ উপজেলাকে প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। একই সঙ্গে বলাবাড়িয়া গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা সম্ভব হবে। তবে আগামীতে জমি অধিগ্রহণপূর্বক স্থায়ীভাবে টেকসই নদীরক্ষা বাঁধের দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে যে রিং বাঁধ আছে তা সংস্কারের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ খাত থেকে একটি বাজেট দেওয়া হয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছেন। বাঁধাবিঘ্ন বা কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *