Spread the love

এসভি ডেস্ক: সাতক্ষীরায় ২০০৫ সালে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ছয় মামলার যুক্তিতর্ক মঙ্গলবার শেষ হয়েছে।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিজ নিজ পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

পরে বিচারক শরিফুল ইসলাম আজ বুধবার রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেন।

সাতক্ষীরার পাঁচ স্থানের সিরিজ বোমার প্রতিটি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জসিট দেওয়া হয়। এর মধ্যে গ্রেপ্তার নয়জন কারাগারে, ছয়জন জামিনে এবং চারজন এখনও পলাতক রয়েছে।

তবে ২০০৭ সালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদের দায়েরকৃত মামলায় আগের মামলার আসামিসহ আরো চারজনের নামে চার্জসিট দাখিল করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে নাসিরুদ্দিন দফাদার নামে একজন ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিস্কের রক্ষক্ষরণজনিত কারণে সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান। আসামিরা দেশের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থান করায় মামলার রায় হতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর লেগে যায়। তবে মঙ্গলবার জেলখানা থেকে নয়জনকে আদালতে আনা হয়। ১০ জন জামিনে থেকে আদালতে হাজিরা দেন। পলাতক রয়েছে সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, সাতক্ষীরা সদরের সাতানির আবুল খায়ের, কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন।

মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শেষে জামিনে থাকা ১০ জনের মধ্যে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মমতাজউদ্দিন ও নূর আলী মেম্বার ছাড়া আটজনের জামিন বাতিল করে মোট ১৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পিপি আব্দুস সামাদ জানান, ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাঁকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিরুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে ধরা পড়ে।

তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাটি চিহ্নিত করা হয়। এই সূত্র ধরে ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানান তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি সবগুলি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জসিট দেয়। সে বছরই মামলাগুলি খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। যথাসময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ এর ২৫ জুন মামলাগুলি খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মামলাগুলির বিচার কাজ শুরু করেন। সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়েরকৃত মামলাটিও ২০০৮ সালে বিচার শুরু হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *