Spread the love

এসভি ডেস্ক: শরীরে লোহার গরম ছ্যাঁকা। পা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন পুড়িয়ে গভীর ক্ষত করে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ( ১২ মে) সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এমনই ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন দেখান সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম গাজীর তৃতীয় স্ত্রী বিলকিস খাতুন (২২)।

এরপর অসুস্থ শরীর নিয়ে বিলকিস সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমার স্বামীর প্রথম স্ত্রী’র দুটি মেয়ে ও দুটি ছেলে রয়েছে। মেয়েরা শ্বশুর বাড়িতে আছে। এক ছেলে বিয়ে করে বাড়িতে আছে। ছোট ছেলে স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়াশুনা করে। এমতাবস্থায় আমার স্বামী ২য় একজনকে বিয়ে করেন। কিন্তু নির্যাতন সইতে না পেরে ওই মহিলা তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর আমাকে (বিলকিস) ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করেন। প্রায় পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনে আমাদের একটি ছেলে হয়।

গৃহবধূ বিলকিস বলেন, আমার বাবার বাড়ি একই গ্রামে। ৯ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে আমি সবার ছোট। বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই আমার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। শুধু টাকা চায়। একপর্যায়ে ভাইদের বলে আমার অংশের ৫ শতক জমি বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া, আরো ৭ শতক জমি আমার স্বামী নিজেই চাষাবাদ করে থাকেন। কিন্তু এই জমিটুকুও তিনি বিক্রি করে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। জমি বিক্রিতে অমত করায় তার ওপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। স্বামী ও বৌমা মিলে তাকে প্রায়ই নির্যাতন করতে থাকে। সবশেষ গত শুক্রবার (৮ মে) বিকালে স্বামী ও বৌমা মিলে লোহা গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে গভীর ক্ষত হয়।

তিনি বলেন, এসময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফেরার পর অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করলেও চিকিৎসা না দিয়ে তারা আমাকে দুইদিন ঘরে আটকে রাখে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে আমার ভাই ও বোনেরা এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

বিলকিসের ভাই সাইফুল ইসলাম এসময় বলেন, বোনকে উদ্ধার করে গত রোববার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু করোনার কথা বলে বোনকে ভর্তি না নিয়ে ওষুধ লিখে দিয়ে ডাক্তার বলেন, পরে আবার আসতে। তিনি বলেন, ওষুধ খাওয়ার পরও আমার বোন খুব অসুস্থ রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার।

এদিকে, সাংবাদিকদের সহায়তায় তিনি তার বোন বিলকিসকে সদর থানায় নিয়ে গেলে ওসি আসাদুজ্জামান মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন তাদের প্রতি। এমনই হৃদয় বিদারক ও লোমহর্ষক ঘটনায় ওই নির্যাতনকারীদের তাৎক্ষণিক আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এবং পুলিশি সহায়তায় মারাত্মক অসুস্থ গৃহবধুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, এঘটনায় মামলা হয়েছে। নির্যাতিতার স্বামী ও তার বৌমাকে আটক করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *