Spread the love

ইব্রাহিম খলিল: ব্যাস্ততম শহর! শহরের রাস্তার উপর দিয়ে ছুটে চলেছে ভারী যানবাহন। সময় রাত ৮ টা। রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল একটি শিশু। অনেকে হয়তো তাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ না কেউ তো থাকে সমাজের এই অন্ধকারে আলো জ্বালাতে। বাড়ী থেকে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটির উপর নজর পড়ল সংবাদকর্মী এসএম আশরাফুল ইসলামের।

সোমবার রাতে সেই সংবাদকর্মীর সহযোগিতায় হারানো শিশুকে ফিরে পেলেন বাবা মা।

শিশুটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার নাম আব্দুল্লাহ,তার বাড়ী বাঁকালে। তবে সেটিও তার সঠিক ঠিকানা ছিল না। শিশুটি তার নিজের খেয়ালে অপরিচিত একটা নাম বলে দেয়। এরপর শিশুটিকে নিয়ে তার পরিরবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে শিশুটির দেখানো সব রাস্তায় ঘুরে ঘুরে খোঁজ নিতে থাকেন তিনি , অবশেষে দীর্ঘ সময় খোজাখুজির পরে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হন।
শিশু আব্দুল্লাহ’র বাবার নাম রবিউল ইসলাম ও মায়ের নাম সুমি খাতুন। তবে সে তার ঠিকানা বলতে পারছিল না।

শিশু আব্দুল্লাহ’র বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ইফতারের সময়ে খেলতে খেলতে কাউকে কিছু না বলেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে। ইফতারের পর থেকে আমরা কদমতলা বাজার, রসুলপুর, বকচরা ও শহরের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পরও যখন শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিনা তখন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এসময় জানতে পারি একজন সাংবাদিক আমার শিশুটিকে তার নানীর বাড়ি (কামালনগর) পৌঁছে দিয়েছে। তাৎক্ষণিক আমরা যেখানে গিয়ে আমাদের হারোনো সন্তানকে ফিরে পায়।’

‘আমাদের সাতক্ষীরা’র সহকারী পরিচালক ও ‘দৈনিক পত্রদূত’ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিনিধি এসএম আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘সোমবার রাত ৮টার দিকে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল’র সামনে একা দাঁড়িয়ে কাঁদছিল ৫-৬ বছরের শিশুটি। বিষয়টি আমার নজরে আসলে আশপাশে শিশুটির পরিবারের খোঁজ করি। কিন্তু আশপাশে কোথাও অভিভাবকের দেখা মেলেনি। শিশুটির কাছে জানতে চাইলেও কিছুই জানাতে পারিনি। এ পরিস্থিতিতে শিশুটিকে সাথে নিয়ে আশপাশে খোঁজাখুজির পরও তার সঠিক ঠিকানা না পাওয়ায় সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। অতঃপর শিশুটিকে সাথে নিয়ে র্দীঘ সময় খোঁজাখুজির পর কামালনগরে তার নানীর বাড়ির সন্ধান পাই এবং সেখানে শিশুর বাবা মায়ের কোলে তাকে পৌঁছে দেই।

‘আমাদের সাতক্ষীরা’র নির্বাহী পরিচালক ও দৈনিক কালেরচিত্র পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আব্দুর রহমান বলেন, ‘সমাজের প্রয়োজনে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আশরাফুল ইসলাম যেভাবে শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের সকলেরই উচিৎ নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমাজের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *