নিজস্ব প্রতিনিধি: আশাশুনি-দেবাহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ আসন। জামায়াত অধ্যুষিত এ আসনে আবারও বিজয় নিশ্চিত করতে কৌশলী হচ্ছে আওয়ামীলীগ। আর সে কারণেই মূলত কেন্দ্রের সিগনালে মাঠে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি খুলনা’র উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ। মানুষ গড়ার কারিগর এই নেতা সৎ ও নির্লোভ এবং জনবান্ধব হওয়ায় তৃণমূলের নেতারা এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের এমপি হিসাবে তাঁকেই দেখতে চাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা, শুভেচ্ছা বিনিময় সহ দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানোয় তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এলাকায় হৈ চৈ পড়ে গেছে। সে কারণেই মূলত জামায়াতের ভোট ব্যাংকে আঘাত হানতে ডা. আ ফ ম রুহুল হক এর পরিবর্তে ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ কে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাচ্ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
দলীয় কেন্দ্রের সূত্র অনুসারে আওয়ামীলীগ ৩০০ আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়নের তালিকা প্রস্তুত করেছেন। সেই তালিকায় ড. আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ’র নাম রয়েছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রে বিশেষ বর্ধিত সভা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। সেখানে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কোন প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার সুস্পষ্ট বক্তব্য মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েকটি বর্ধিত সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যেসব এমপি এলাকায় জনকল্যাণে কাজ করেন না, দুর্নীতি করেছেন, তাদেরকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এলাকার জনপ্রিয়, সৎ ও নির্লোভ গণমানুষের নেতা দেখেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
দলের সভানেত্রী বলেছেন, এলাকায় জনগণের জন্য কাজ করে টাকা নিলে জনগণ তো ভোট দেবে না।’ অনেক এমপির ক্ষেত্রেই এই অভিযোগ শতসিদ্ধ। এছাড়াও এমপিদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ বেশ জোরেশোরেই উঠেছে। শুধু নিয়োগ বাণিজ্য নয়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাতেও অনেক এমপি জড়িয়ে পড়েছেন। এমপিদের দূনীর্তি নিয়ে তৃণমূলে আওয়ামী লীগই বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। ফলে অনেক এমপিই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। অন্যদিকে নানা অভিযোগের কারণে এলাকার মানুষের মাঝে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন ডা. রুহুল হক এমপি। সে দিক থেকে বিবেচনা করলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে সাতক্ষীরা-০৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না তিনি। সেক্ষেত্রে সৎ, বিনয়ী ও নির্লোভ মানুষ হিসাবে ড. আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ শতভাগ মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে দাবী করেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
এ আসনে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, লে.কর্ণেল জামায়েত হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও জর্জ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আজাহার হোসেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এ্যাড. স. ম সালাউদ্দিন, জেএসডি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আতিয়ার রহমান গদাই, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বরুণ কুমার বিশ্বাস, আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম রফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ডা: ইসহাক আলী নিজ নিজ দলের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। জামায়াতের মুহাদ্দিস রবিউল বাসার স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে নাম শোনা যাচ্ছে ।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো: আব্দুল হান্নান (মন্টু) বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ শক্তিশালী করতে পারবেন। তাই, ইউসুফ আব্দুল্লাহ’র সার্বিক কর্মকান্ডের মূল্যায়ন করে তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে এ আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
আশাশুনি থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, সব সময় জনকল্যাণে কাজ করার জন্য এলাকার মানুষের কাছে প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্লাহ সমধিক সমাদৃত। তাই এলাকার উন্নয়নে এমন সৎ, মেধাবী ও উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন দেবে বলে প্রত্যাশা করি।
সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. গোলাম মোস্তাফা তাঁর অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ইউসুফ আব্দুল্লাহ নিজ এলাকাতে এসে রাজনীতিতে অংশ নেয়ায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। তাদের নিয়ে সভা সমাবেশে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়নমুখী রাজনীতি ও তাঁর সাফল্য এবং ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার জন্য সমর্থন সৃষ্টিতে মাঠে কাজ করছেন।