আব্দুর রাজ্জাক, আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৭টি বিলে গত দুই বছরে আমন ধানের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি চাষীরা। বিলসমূহের একমাত্র ফসল হিসেবে চাষ হওয়া আমন ধানেরর ফসল ফলাতে না পেরে কৃষকদের মাথায় হাত উঠে গেছে।
বিগত দু’বছরে বিল সমূহে পানি নিঃষ্কাশন ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার কারনে বিলের ধান চাষের জমিসহ বাড়ি ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ফলে জমির মালিকগণ তাদের বছরের চাউলের চাহিদা পুরনের একমাত্র উপায় আমান ধান না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া গো খাদ্য হিসাবে বিচালির সংকট দেখা দিয়েছে।
ফটিকখালী বিলে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধান বিহীন বিলে এখনও হাটু পানি। ঘাস, চেচু, শাফলা ফুলসহ নানা আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ বিল জুড়ে জায়গা করে নিয়েছে। কোথাও আমন ধানের ক্ষেত চোখে পড়েনি। এমন চিত্র খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া, রাউতাড়া, পিরোজপুর, গোয়ালডাঙ্গা, গজুয়াকাটি, দূর্গাপুর বিলের হাজার হাজার বিঘা জমিতে বিরাজ করছে।
স্থানীয় কৃষক আলা উদ্দীন জানান, বিল গুলোর পানি সরবরাহের এক মাত্র পথ ছিল কালকীর স্লুইস গেট। কিন্তু পলি জমে ও কপোতাক্ষ নদ খনন কাজ চলামান থাকায় কালকীর গেটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে বিলসহ নীচু এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমন মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে এই বিলগুলোর পানি আর কমেনি। কৃষকরা সময়মত বীজতলা তৈরী, জমি চাষ, ধানের চারা রোপন কোন কাজই করতে পারেনি। একমাত্র আমন ধান না হওয়ায় কৃষকদের নানা অভাব অনটন দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে গো-খাদ্যের সংকটও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক তাড়ি বিচালি খামারীরা মান ভেদে ৫ থেকে ৭টা দরে ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয় সমাজ সেবক বোরহান উদ্দীন জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে জনপ্রতিনিধি, ব্যক্তি পর্যায় ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও শেষ পর্যন্ত সেসব পদক্ষেপ আলোর মুখ দেখেনি। কৃষকদের গলার কাটা কেউ সরাতে পারেননি। সরকারিভাবে সেচ প্রকল্প চালু হলে জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। আবার ইউনিয়নের বিলগুলোর ভিতর সরকারি খালগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো পূনঃখনন করতে পারলে কৃষকরা বোরো ধান লাগিয়ে আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে তিনি জানান।
সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।