নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন জরায়ুরমুখ ক্যান্সার রুখে দিন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে এক মাসব্যাপী (১৮ কর্মদিবস) এইচপিভি ক্যাম্পেইনের টিকাদান কার্যক্রম ২০২৪। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় সাতক্ষীরা জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ৮৫ হাজার ১০৭ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৩ হাজার ৩৪৪ জন মোট ৮৮ হাজার ৪৫১ মেয়েকে এক ডোজ করে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনিুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. আব্দুস সালাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী, ইউনিসেফ কনসালটেন্ট ডাঃ লি শান্তা, মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ উদ্দীন মৃধা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার জয়ন্ত সরকার প্রমূখ।
সিভিল সার্জন ডাঃ মো. আব্দুস সালাম বলেন, বাংলাদেশে নারীদের ক্ষেত্রে জরায়ুরমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশে প্রতি ১ লাখ নারীর ১১ জন জরায়ুরমুখ ক্যান্সার অক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন মহিলা জরায়ুরমুখ ক্যান্সার জনিত রোগে মারা যায়। এইচপিভি টিকা জরায়ুরমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এই টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। জরায়ুরমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকার একটি ডোজই যথেষ্ট। বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নারীদেরকে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এই টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা নারীদের অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ক্যন্সার নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। ক্যান্সার হলে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। একটি মাত্র ভ্যাকসিনের মাধ্যমে আমরা এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি। এই ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জরায়ু ক্যান্সার দূর করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর মোট ১৮ কর্মদিবস চলবে। এর মধ্যে প্রথমে ২৪ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর ১০ কার্যদিবসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী কেন্দ্রে এবং ৯ নভেম্বর থেকে ২৪ নভেম্বর ৮ কর্মদিবস কমিউনিটির অস্থায়ী ও স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলবে। টিকাদান সেশন ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলবে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় জেলার ১৭৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৬১৪টি কেন্দ্রে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ৮৫ হাজার ১০৭ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ১৯০৪টি কেন্দ্রে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৩ হাজার ৩৪৪ জন মোট ৮৮ হাজার ৪৫১ মেয়েকে এক ডোজ করে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। জেলায় স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ৮টিসহ মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৩০৭টি।