Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকার পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রভাবশালী রাশেদ আহমেদ খোকার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ইটাভাটা দখল পূর্বক লাখ লাখ টাকার ইট বিক্রি করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন শহরের বাটকেখালী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মিজানুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নে ২০১২-১৩ অর্থ বছরে মেসার্স গাজী ব্রিকস নামীয় একটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করে। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই বছর ব্যবসা ভালো চললেও অনেকের কাছে ইট বিক্রির টাকা অনাদায়ী থাকায় চরম অর্থ সংকটে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ইটভাটাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে ভাটার ম্যানেজার সোহরাব হোসেন তার নিকট আত্মীয় চাপড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে রাশেদ আহমেদ খোকার সাথে যোগাযোগ করে দেয়। অর্থ সংকট থাকায় উপায়ন্তর হয়ে রাশেদ আহমেদ খোকার সাথে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর একটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র করি। কিন্তু চুক্তির পর আমাদের কোনঠাসা করে ইচ্ছামত ইটভাটা পরিচালনা করতে থাকেন খোকা। কোন হিসাব না দিয়ে ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুই বছরের ভাটার লাভের যাবতীয় টাকা রাশেদ আহমেদ খোকা নিজে আত্মসাত করেন।

মিজানুর রহমান আরও বলেন, ব্যবসায়িক চুক্তিভঙ্গ করায় খোকার সাথে ব্যবসা না করার ঘোষণা দিয়ে আমার পিতা তৎকালিন পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু খোকা সেখানে হাজির হলেও তার অসহযোগিতার কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি। পরে আশাশুনি থানায় অভিযোগ দিলেও কোন সমাধান না হওয়ায় তৎকালিন আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান দুই বছরের হিসাবের কথা বললে রাশেদ আহমেদ খোকা তালবাহানা করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে দুই বার বসাবসি হলেও কোন সমাধান হয়নি। পরে ২০১৬ সালে তৃতীয়বার বসাবসিতে সমাধান না হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন যার নামে লাইসেন্স তিনিই ভাটার ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন। সে সময় আমার পিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি ভাটার দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে ব্যবসা পরিচালনার জন্য বেসিক ব্যাংক থেকে ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এ দীর্ঘ ৮ বছরে খোকা কোথাও কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৬ আগস্ট ৪০/৫০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে খোকা আমাদের ইটভাটাটি দখল করে নেয়। এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ভাটার কর্মচারী এবং আমাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয় তারা। সেসময় ভাটায় ১৬ লাখ ইট মজুদ ছিলো। ওই ইটগুলো কম মূল্যে বিক্রি করে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন খোকা। এছাড়া ভাটায় থাকা মেশিন, মাছ, হাঁস মুরগিসহ অন্যান্য মালামালসহ প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। খোকা তার ভাড়াটিয়া বাহিনীর সহযোগিতায় আমাদের ইট ভাটাটি এখনো দখল করে রেখেছে। ফলে আমি চরম অর্থ সংকটে পড়েছি। বিশেষ করে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পরসম্পদ লোভী খোকার হাত থেকে ইট ভাটাটি উদ্ধার করতে না পারলে আমাকে পথে বসতে হবে।

তিনি রাশেদ আহমেদ খোকার কবল থেকে ভাটাটি উদ্ধার পূর্বক সমুদয় অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *