নিজস্ব প্রতিনিধি: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) দুপুরে প্রেসক্লাবের মরহুম আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কলারোয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেথ আব্দুল কাদের বাচ্চু বলেন, তালা-কলারোয়ার সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব জননন্দিত। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাতক্ষীরার বহু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলায় হাবিব এমপিকে ৭০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আরো ৫০ জন নেতা কর্মীদের ১৮ বছর থেকে শুরু করে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অযত্ন অবহেলায় কারাগারে বিনা চিকিৎসায় চারজন বিএনপি নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। এসব মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, এগুলো পরিকল্পিত হত্যা। এঘটনায় কারাকর্তৃপক্ষের নামে মামলা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু বলেন, সাতক্ষীরা কারাগারে ৪৬ জন নেতা কর্মী এখনো বন্দী আছেন। আর ঢাকার কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় বন্দী রয়েছেন জননন্দিত জননেতা ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দেওয়া হোক। একই সাথে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কলারোয়া শাখায় ডাকাতিকালে দুইজন নৈশপ্রহরীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপনসহ জড়িত অন্যদের গ্রেফতার করে বিচার, ২০১৩ সালের ৫ মার্চ কলারোয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর কার্যালয়ে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে একজন নিহত ও গুরুতর তিনজন জখমের ঘটনার বিচার করা, ২০০০ সালের ২ মার্চ কলারোয়া সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার সময় পদপৃষ্ঠে লিপি, ফজিলা, হাবিব ও মামুন নিহত হয়। এঘটনায় নিহতদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ওই সালের ১৮ মে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে কলারোয়া বলফিল্ড ময়দানে জনসভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু ওই দিন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জনসভার মঞ্চ ভাঙচুর করে। এসময় মাষ্টার রফিকুল ইসলাম (প্রয়াত) বাঁধা দিলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে ফেলে রাখে। ওই ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন জনসভা বন্ধ করে দেয়। এরপর ৫ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বন্যায় প্লাবিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে সড়ক পথে কলারোয়ায় আসার সময়ে সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা চালায় ও তাঁকে (খালেদা জিয়া) হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ করে। এরপর তিনি বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঢাকায় ফিরে যান।
এছাড়া, কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার ঘটনায় অর্থ জোগান দাতা, ইন্ধনদাতা, প্ররোচনাকারি ও আদালতে শপথ নিয়ে মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলে ধরেন বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু।
সংবাদ সম্মেলেনে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সহ সমন্বয়ক তারিকুল হাসান, সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাসান হাদী, জেলা যুবদলের সমন্বয়ক আইনুল ইসলাম নান্টা, কলারোয়া যুবদলের সভাপতি এম এ হাকিম, পৌর যুবদলের সভাপতি জাভিদ রায়হান লাকি প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে নেতা কর্মীরা মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন