অনলাইন ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পদত্যাগ দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হত্যা-গুমের অভিযোগে আরও অন্তত সাতটি মামলা হয়। এবার বগুড়ায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শিক্ষক সেলিম হোসেনের (৩৫) বাবা সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার মোট ১০১ জন আসামির মধ্যে আওয়ামী লীগের দুইজন সাবেক সংসদ সদস্য, পাঁচজন উপজেলা চেয়ারম্যান, দুইজন মেয়র, বগুড়া পৌরসভার আটজন কাউন্সিলর, ১০ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ২৫ জনপ্রতিনিধি আছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় স্টেশন সড়কে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তারা ককটেল ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেন। হামলায় শিক্ষক সেলিম হোসেন রক্তাক্ত হন। এ ছাড়া বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও আমিনুল ইসলাম রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং কাউন্সিলর আরিফুর রহমান হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করেন। পরে অন্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
মামলায় আইনি সহায়তাকারী আইনজীবী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল বাসেত বলেন, ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে এই দুজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া হত্যা ও গুমের অভিযোগে অন্তত আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।