Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: চিংড়ি ঘের নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মুছা গাজীকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আটজনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে এ মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে, শুক্রবার (৫ জুন) বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে আবুল কাশেমের লাশের ময়না তদন্ত শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের খোলপেটুয়া গ্রামের চিংড়ি ঘেরের ২৫ বিঘা জমি নিয়ে আমার স্বামী আবুল কাশেম ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমানগাজীদের বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আমি ও তার স্বামী আবুল কাশেম বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মাছ ধরতে যাই। রাত ১২টার দিকে আঁটল ঝাড়ার জন্য নৌকায় উঠলে স্থানীয় দুদু গাজীর ছেলে লোকমান গাজী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুছা, রুহুল আমিন গাজীর ছেলে সালাউদ্দিন গাজী, দাউদ গাজীর ছেলে সেকেন্দার গাজী, রহিম গাজীর ছেলে সুমন গাজী এবং আবু সাইদসহ ২০-২২ জন তাকে (ফিরোজা) ঘেরের মধ্যে মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ডিঙি নৌকার মধ্যে তার হাত, পা, চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখে। পরে আমার স্বামীকে নৌকা থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ঘেরের পানিতে পুঁতে ফেলে রেখে চলে যায়।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি বেগম মাহফুজা সুলতানা রুবি বলেন, ঘের নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে গাবুরা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা কৃষক লীগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন কর্মসূচি নেওয়া হবে।

এদিকে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যে বা যারা জড়িত থাক না কেন সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

অপরদিকে, নিহতের ভাই জাবিদ হাসান জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে ভাই আবুল কাশেমের লাশ দাফন করা হয়েছে। দুই দিনেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় বাদীসহ পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

শ্যামনগর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরল বিশ্বাস জানান, আবুল কাশেম হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদি হয়ে খোলপেটুয়া গ্রামের আফছার গাজীর ছেলে মুছা গাজীকে প্রধান আসামি করে আরও ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় আসামিদের বাড়ি হওয়ায় তারা বনের ভিতরেই আত্মগোপন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *