এসভি ডেস্ক: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সমাবেশস্থলের পাশে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৪ জনের রায় ফায়ারিং স্কোয়াডে কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায়ে এই আদেশ দেন।
রায়ে আদালত বলেন, ‘একটি ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো। নির্দেশ মোতাবেক তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোনো অসুবিধার কারণ থাকলে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো।’
প্রায় ২০ বছর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান মূল আসামি হলেও অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এ মামলার রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান, তারেক হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, সালোয়ার হোসেন মোল্লা, মাওলানা আমিরুল ইসলাম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও আনিসুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া পলাতক আছেন আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ শেখ, মো. এনামুল হক ও মোছাহেব হাসান।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যারয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।
এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন।
২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন সিআইডি’র এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চালাকালীন বিভিন্ন সময়ে আদালত মোট ৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১০ জঙ্গির সাজা বহাল রাখেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি ও ১৪ বছর করে সাজাপ্রাপ্ত ৩ আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আলোচিত এ মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে করাদণ্ড দেয়া হয়।