Spread the love

এস ভি ডেস্ক: ডেনমার্কের অধীনের গ্রিনল্যান্ডের একটি গ্রামের দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল একটি আইসবার্গ। সাগরে ভাসমান ওই বরফখণ্ড ভেসে আসার কারণে ইন্নারসুট নামের ওই গ্রামের কিছু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের ভাষ্য, তাঁরা এত বড় আইসবার্গ আগে কখন দেখেননি। আর আইসবার্গ ফাটল ধরা চিন্তিত গ্রামের মানুষ। কারণ আইসবার্গটি ভেঙে পড়লে ঢেউয়ের কারণে ভেসে যাবে আশপাশেরও কয়েকটি গ্রাম।

ওয়াশিংটন পোস্ট ও বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কোনাকুনি পাথুরে জায়গার ওপর ইন্নারসুট গ্রামটি অবস্থান। গ্রামের তিন দিকেই সমুদ্র। আইসবার্গটির ওজন ১ কোটির টনের বেশি। আইসবার্গটি গ্রামটির চেয়েও বেশ উঁচু। আইসবার্গটি গ্রামের খুব কাছে এসে গেছে। ধীরে ধীরে সামনের দিকে ভেসে আসছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আইসবার্গটি ভেঙে পড়লে সাগরে যে ঢেউয়ের সৃষ্টি তৈরি হবে, তাতে ওই গ্রামের বাড়িঘরসহ আশপাশের অনেক গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ইন্নারসুট গ্রামের ১৬৯ জন লোকের বাস। যাদের বাড়ি সাগরের একেবারে তীরে এমন ৩৩ জনকে দ্বীপ থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে। যারা নৌকায় চলাচল করে, তাদের আইসবার্গের এলাকা থেকে নিরাপদে চলাচল করতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।

গ্রামটির বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জ্বালানি তেলের ডিপোও সাগরের বেশ কাছেই। আইসবার্গটি ভেঙে পড়লে ভেসে যাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জ্বালানি তেলের ডিপোও।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, আইসবার্গটি ৬৫০ ফিট প্রশস্ত। দৈর্ঘ্য দুটি ফুটবল খেলার মাঠের সমান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৩০০ ফুটের বেশি।

ইন্নারসুইট গ্রামের স্থানীয় কাউন্সিলরের চেয়ারম্যান কার্ল পিটারসন কানাডা ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারটি নিয়ে অবগত। আমরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

ইন্নারসুট গ্রামটি গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুক থেকে ৬০০ মাইল উত্তরে। এই গ্রামের মানুষ সাগরে মাছ ধরেই জীবন যাপন করেন। গ্রামটি অনেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকার মতো। এখানে যেতে নৌকা বা হেলিকপ্টারই প্রধান মাধ্যম।

ফেসবুক, ইউটিউবে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লোকজন গ্রাম থেকে সরে যাচ্ছেন। গ্রামের কাউন্সিল সদস্য সুজান এলিসেন স্থানীয় পত্রিকাকে বলেছেন, আইসবার্গটির গায়ে ফাটল দেখা যাচ্ছে। তাই আমরা ভয়ে আছি। কারণ যেকোনো সময় আইসবার্গটি ভেঙে পড়তে পারে।

গ্রিনল্যান্ড দ্বীপের পুলিশ প্রধান কুনাক ফ্রেডিকসেন এএফপিকে বলেন, গ্রামের কাছাকাছি চলে আসছে আইসবার্গটি। গ্রামের লোকজন এবং পুলিশ সদস্যরা করণীয় ঠিক করতে আলোচনা করছেন।

গত বছর জুনে ইন্নারসুট থেকে ১৭ মাইল উত্তরের গ্রাম নুগাটিসিয়াকে ৪ দশমিক এ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সাগরের ঢেউয়ের কারণে বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় চারজনের প্রাণ যায়। ইন্নারসুট গ্রামের বাসিন্দাদের ভাগ্য নির্ভর করছে আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়ার ওপর।

সম্প্রতি বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আইসবার্গ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। গত মাসে বিজ্ঞানীরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যাতে পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে একটি হিমবাহ থেকে এক বিশাল আইসবার্গ আলাদা হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।