বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বর্তমানে অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকা অতিরিক্ত সচিব খান মো. নূরুল আমিনের (আইডি নং-৬২৮৩) বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার আদেশের ফলে জলমহাল লুটপাট ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন দুই ব্যক্তি। খান মোঃ নূরুল আমিন এর নিকট ক্ষতিপূরণ দাবিতে মন্ত্রীপরিষদ ও জনপ্রশাসন সচিব বরাবর দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত দুই ব্যক্তি উপজেলার প্রতাপনগরের মো. নূরে আলম সিদ্দিকী ও মো. আব্দুর রশিদ মোড়ল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া এক লিখিত আবেদনে জানান, ২০০৪ সালের ২৭ অক্টোবর আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের গড়ইমহল জলমহালটি একসরা যুব সমবায় সমিতির পক্ষে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তারা ইজারা পান। কিন্তু ইউএনও খান মো. নূরুল আমিন কর্তৃক ইজারা বাতিলের আদেশ দেওয়ার পর তাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ ও অন্যান্য সম্পদ লুটপাট হয়।
এরপর ইজারা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে রিট করলে হাইকোর্ট সেটি স্থগিত করে। এছাড়া আশাশুনি সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা মামলা নং ১০৯/২০০৫-এর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ইউএনওর বিরুদ্ধে আদালতে ভায়োলেশন মামলা করা হয়, যেখানে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মো. নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খান মো. নূরুল আমিন এর আত্মীয় স্বজন বাগেটহাট জেলার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এতদিনে অভিযোগ দায়ের করতে পারিনি। সে সময় খান মোঃ নূরল আমিন তার বিরুদ্ধে করা ভায়োলেশন মামলা যাতে তুলে নেওয়া হয় ও অপরাধ গোপন রাখতে অধীনস্থ কর্মকর্তাদের দিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলা করান। এসব মামলায় বাদীরা আদালতে স্বীকার করেছেন যে, তারা চাকরি রক্ষার স্বার্থে ইউএনওর নির্দেশ পালন করেছিলেন মাত্র।
ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে তাদের প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন তারা।
তারা জনপ্রশাসন ও মন্ত্রীপরিষদের সচিবের কাছে দাবি জানিয়েছেন, ইউএনও’র স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তাদের ক্ষয়ক্ষতির বিবেচনায় অন্তত দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হোক। একইসঙ্গে অভিযুক্ত সাবেক ইউএনওর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।