admin
- ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ / ২৬৪ Time View
এসভি ডেস্ক: সাতক্ষীরা শহরের আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিকের ভূল চিকিৎসায় অসুস্থ হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলেজ শিক্ষার্থী সুবর্ণা। তার এই ভূল চিকিৎসার প্রতিকার চেয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সুবর্ণার মা সেলিনা আক্তার।
গত বৃহস্পতিবার(৩০ জানুয়ারী) সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগে সেলিনা খাতুন যা লিখেছে তা হুমহু তুলে ধরা হলো- ‘আমার কন্যা বিগত ০৪/১২/২০২৪ ইং তারিখে এপেন্ডিক্স জনিত ব্যাথা অনুভব করায় আমি তাহাকে সাতক্ষীরায়স্থ আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডাঃ মুশফিকুর রহমান এর তত্ত্ববধায়নে তাকে দেখানো হয়। দেখানোর পর ডাক্তার সাহেব তাকে এখানে ভর্তি হয়ে অপারেশন করতে বলে। ডাক্তারের কথা মত ঐ দিন রাতে তাকে অপারেশন করানো হয়। অপারেশন হওয়ার ৪ দিন পর অর্থাৎ ০৭/১২/২০২৪ ইং তারিখে আমার কন্যাকে ছাড় পত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়। ছাড়পত্র দেওয়ার দিন আমার কন্যা বমি ও পাতলা পায়খানা করে। আমি উক্ত বিষয় নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে আমার কন্যার অসুস্থতার কথা বলিলে ডাক্তার সাহেব বলেন এটা স্বভাবিক বিষয়। ঠিক হয়ে যাবে আপনারা বাড়ী যান। আমি ডাক্তারের কথা মত আমরা কন্যা কে সাথে নিয়ে বাড়ী যাই। পরবর্তী দিন অর্থাৎ ০৮/১২/২০২৪ ইং তারিখে অবস্থার উন্নতি না হলে পূর্ণরায় আবার হাসপাতালে আমার কন্যা কে নিয়ে ভর্তি করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখে বলেন ইনফেকশন হয়েছে আবার অপারেশন করতে হবে এবং তারা আমার কন্যা কে সুস্থ্য করার জন্য পূনরায় অপারেশন করেন। তারপর আমরা বাড়ী হইতে প্রায় দিন আনোয়ারা ক্লিনিকে উক্ত ডাক্তার সাহেবের তত্ত্ববধায়নে ড্রেসিং করতে থাকে। পরবর্তীতে একের পর এক ড্রেসিং করতে করতে ইনফেকশন হয়ে কাটা জায়গাটি কালো হয়ে যায়। ক্রমান্নয়ে রক্ত, পুচ আসতে থাকে। ডাঃ মুশফিকুর রহমান আমাকে বলেন যে, আমার মেয়েকে পুনরায় অপারেশন করতে হবে, আমি উপায়ন্ত না পেয়ে ডাক্তার সাহেবের কথা রাজী হয়ে সম্মত্তি প্রদান করি। উক্ত সময় আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডাঃ মুশফিকুর রহমান এর নির্দেশে ম্যানেজার ইক্তারুরল ও ওয়ার্ড বয় খায়রুল, চিরঞ্জিতগণ আমার মেয়ের অপারেশন করে। অপরেশন করার পর আমার কন্যার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। গত ২৬/০১/২০২৫ তারিখে পুনরায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাঃ মুশফিকুর রহমান আমাকে বলেন যে, তার আর কিছু করার নেই। আমি ডাক্তার সাহেবের সাথে কোন কথা বলার পূর্বের তিনি আমাকে বলেন যে, তিনি অনেক ব্যস্থ, অন্য অপরেশন আছে। আমি হাসপাতালে থাকতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে উক্ত হাসপাতাল হইতে জোর করে বের করে দেয়। আমি কোন উপায়ন্ত না পেয়ে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যাই। সদর হাসাপাতালে দায়িত্বরত জনাব, ডাক্তার সুব্রত মন্ডল দেখে বলেন যে বায়োফসি করতে বলেন এবং আরো বলেন রোগীর অবস্থা ভালো না এখনই অপারেশন করতে হবে। তার কথা মত পুনরায় অপারেশন করি। অপারেশন করার পরও আমার কন্যার অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। আমি গরিব মানুষ আমার পক্ষে আমার কন্যার এই ব্যয় বহুল চিকিৎসা খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আমার কন্যা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। আনোয়ারা ক্লিনিকের ডাঃ মুশফিকুর রহমান আমার কন্যাকে ভুল চিকিৎসা করে এবং তাকে একাধিকবার অপারেশন করে যার ফলে আমার কন্যা বর্তমানে মৃত্যু পথযাত্রী।
অতএব, জনাব সমীপে আমার আকুল আবেদন এই যে, উপরোক্ত বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আমি যাহাতে নার্য্য বিচার পাইতে পারি তাহার বিহীত ব্যবস্থা করিতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডা. মুশফিকুর রহমান বলেন, ইনফেকশন হবার পর যখন ড্রেসিং করা হয় তখন আমাদের ডিউটি ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তাকে যখন ড্রেসিং করা হয় তখন মহিলা নার্সও উপস্থিত ছিলেন। উনারা যে অভিযোগগুলো করছেন সেগুলো সঠিক না।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের অফিস সহকারী করিমুল্লাহ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।