বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
দুমকীতে মাদকের রমরমা কারবার! ঝুঁকছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তারুণ্য মেলায় উদীচীর ব্যানার খুলে অগ্নিসংযোগ সাতক্ষীরায় প্রাইম ব্যাংক জাতীয় স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ সাতক্ষীরা সিটি কলেজের বহিস্কৃত অধ্যক্ষ শিহাব উদ্দিন রিমান্ডে ঝাউডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আজমল উদ্দিন হ’ত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মতবিনিময় জেলা আইনজীবী সহকারী রিপোর্টার্স ইউনিটের মাসিক সভা সাতক্ষীরায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে আইনজীবী সহকারী সমিতির ফুলেল শুভেচ্ছা  সাতক্ষীরা সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আশাশুনির প্রতাপনগরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

সংঘর্ষ থামাতে ইট বৃষ্টির মধ্যে সাহসী ভূমিকায় শ্যামনগরের ইউএনও রনি খাতুন

শ্যামনগর প্রতিনিধি: বিএনপির বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে তখন রীতিমত ইট বৃষ্টি চলছে। ঢাল সড়কি নিয়ে সড়কের দুই প্রান্তে অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে মত্ত উভয় শিবির। পুলিশ ও সেনাবাহিনী কিছুটা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চেষ্টা চালাচ্ছেন সংঘর্ষে লিপ্ত পক্ষদ্বয়কে নিবৃত করতে। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে জ্যাকেট কিংবা হেলমেট ছাড়াই সংঘর্ষ থামাতে দৌঁড়ে গেলেন উভয় পক্ষের মধ্যবর্তী স্থানে।

রীতিমত চমকে দেয়ার মতো এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন। একজন নারী কর্মকর্তা হয়েও কোন ধরনের নিরাপত্তা সামগ্রী ছাড়াই ‘বাটল ফিল্ডে’ তার এমন উপস্থিতি চমকে দিয়েছে সবাইকে। সাহসিকতাপূর্ণ তার এমন ভূমিকার জন্য সাধারণ মানুষসহ দু’পক্ষই রীতিমত তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বুধবার বিকাল পাঁচটার দিকে এমন দুঃসাহসিক কান্ড ঘটিয়ে রনী খাতুন এখন শ্যামনগরের মানুষের কাছে ভাইরাল ইউএনওর খেতাব পেয়েছেন।
জানা যায়, কমিটি নিয়ে বিএনপির কমিটি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ উত্তেজনা চলছে। ইতোমধ্যে উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদপন্থী নেতাকর্মীদের সাথে সাধারণ সম্পাদক সোলায়মানপন্থীদের দু’দফা সংঘর্ষ হয়েছে গত ১৯, ২০ ও ২১ জানুয়ারি। এসবের ধারাবাহিকতায় বুধবার উভয় পক্ষ শ্যামনগর উপজেলা সদরে পৃথক কর্মসুচি আহবান করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিকাল চারটার কিছু আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আসাদুজ্জামান লিটন, রবিউল অপারপর সংবাদকর্মীরা জানান, বংশীপুর থেকে নেতাকর্মীরা শ্যামনগরে প্রবেশের পথে প্রশাসনের বাধায় পিছু হটে। একপর্যায়ে তারা ফিরে যাওয়ার সময় ইসমাইলপুর এলাকায় পৌছে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্যদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। এসময় খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উক্ত নারী কর্মকর্তা নিজের দেহরক্ষী আনছার সদস্যসহ সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের পিছু ফেলে দৌড়ে চলে যান সংঘর্ষের মধ্যে। এসময় তার পাশে থাকা সাইফুল নামের এক আনছার সদস্য বুকে ও শ্যামনগর থানার ওসি হুমমায়ুন কবীর পায়ে ইটের আঘাতপ্রাপ্ত হলেও দ্রুত মাঝখানে পৌঁছে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসময় তার উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পক্ষদ্বয় কিছুটা রণে ভঙ্গ দেওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল রিফাতকে সাথে নিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় উভয় পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে হটিয়ে দেন।
এবিষয়ে সোলায়মান কবীরের পক্ষের যুবদল সভাপতি সফিকুল ইসলাম দুলু জানান, একজন নারী হয়ে তিনি অনেক সাহসী ভুমিকা রেখেছেন। কিভাবে তিনি এমন দুঃসাহসিকতা দেখালেন বোঝা যাচ্ছে না।

আব্দুল ওয়াহেদ পক্ষের জেলা বিএনপির সদস্য আশেকই এলাহী মুন্না জানান, অলৌকিকভাবে ইউএনও ম্যাডাম রক্ষা পেয়েছেন। তার সাহসী ভূমিকার কারণে পরবর্তীতে সংঘর্ষ থামানো গেছে বলেও মন্তব্য করেন এ বিএনপি নেতা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন জানান, তিনি জ্ঞাতসারে এমন কাজ করেছেন। আরও বেশি ক্ষতি হওয়ার আগেই সংঘাত থামাতে কাউকে না কাউকে পদক্ষেপ নিতে হতো। তিনি সকলকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজার রাখার আহবান জানান।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্টটি শেয়ার করুন

©All rights reserved© SatkhiraVision.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com