বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
এস এম মিজানুর রহমান, শ্যামনগর: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইটভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনকারী ডাম্পার, ট্রাক্টর (টলি), এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানবাহন। এসব যানবাহনের তাণ্ডবে সড়ক অবকাঠামো ভেঙে পড়ছে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে এবং ধুলাবালু ও শব্দদূষণের কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জনজীবন হয়ে উঠেছে অসহনীয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অবৈধ যানবাহনের চলাচল হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অদৃশ্য কারণেই এ বিষয়ে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে দাবি তাদের।
শ্যামনগরের বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, প্রতিদিন মাটি, বালু ও ইটবাহী ডাম্পার এবং ট্রাক্টর চলাচলের ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে সড়কে গভীর গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।
তিনি আরও জানান, এসব যানবাহনের চালকদের অধিকাংশেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই,বা কম বয়সী শিশু ফলে তারা অনভিজ্ঞতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।
আটুলিয়া ইউনিয়নের বড় কপুট গ্রামের আয়েশা খাতুন জানান,ধুলাবালির রাস্তায় অবৈধ ডাম্পার চলাচলের কারণে পরিবেশ এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে বা বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এখানকার মানুষের জীবন আরও বিপন্ন হবে।
কৈখালী ইউনিয়নের শরিফ গাজী বলেন, প্রতিদিন শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলি ও ডাম্পারের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। দ্রুত এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো দরকার।কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত সড়কগুলো এই অবৈধ যানবাহনের কারণে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো এলাকার পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। প্রতিদিন শ্যামনগর মেন সড়ক দিয়ে কয়েক শত ডাম্পার ও ট্রাক্টর চলাচল করে। এসব গাড়ির অতিরিক্ত ওজনের কারণে সড়ক ভেঙে গেছে। আমরা এমনকি জরুরি প্রয়োজনে সড়ক ব্যবহার করতে পারি না। দুর্ঘটনার ভয় সবসময় কাজ করে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই বিষয়টি সমাধান করা।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুন বলেন, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কিছুদিন এসব যানবাহনের চলাচল বন্ধ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সড়ক ও পরিবেশ রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তারা বলেন, যদি প্রশাসন দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এই অঞ্চলের পরিবেশ ও জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।