Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল ফজল মো. নুরুল্লাহ’র বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপবৃত্তির টাকা পাবার কথা থাকলেও অধ্যক্ষ প্রতারণার মাধ্যমে তাদের উপবৃত্তির সিম নিজের কাছে রেখে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য ফেরত দেওয়া টাকা শিক্ষার্থীদের না দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি এক শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষ ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও বহিরাগত নারী নিয়ে মাদরাসায় রাত্রী যাপনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার সত্যতা পেয়ে অধ্যক্ষ আবুল ফজল মো. নুরুল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি। তবে, অধ্যক্ষ পুনর্বহালের জন্য আবেদন করেছেন। অধ্যক্ষর দাবি, তার সাময়িক বহিষ্কার অবৈধভাবে করা হয়েছে। আবেদনে এ ঘটনায় আবারো তদন্ত শুরু হয়েছে।

মাদরাসার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফাজিল বিভাগের শিক্ষার্থী আয়শা খাতুন বলেন, ফাজিল ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষার আগে পরিক্ষা না দিতে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে উপবৃত্তির সিমটি অধ্যক্ষ আবুল ফজল মো. নুরুল্লাহ হুজুর আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিলেন। আমার সামনেও অনেকের কাছ থেকে সিম নিয়েছিলেন তিনি। যখন সিমটি দিতে অস্বীকার করি তখন আমাদের বলা হয় সিমটি না দিলে পরীক্ষার হলে কড়াকড়ি করবে এবং কোন সুযোগ সুবিধা দেবে না। তখন আমরা বলি আমাদের ব্যক্তিগত সিম দিয়ে দিলে আমরা চলবো কিভাবে, তখন তিনি আমাদের এই সিমটা বাদে নতুন একটা সিম তুলে নেন। তখন পরিস্থিতির শিকার হয়ে নতুন সিম ওঠিয়ে নগদ একাউন্ট খুলে উনার কাছে দিয়েছিলাম ফার্স্ট ইয়ারে, আর থার্ড ইয়ারে উঠে সিমটি যখন ফেরত দিয়েছিলেন তখন ওই সিমে কোন টাকা পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থী আরিফ খান বলেন, আমাকে তালা ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল ফজল মো. নুরুল্লাহ চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরি দেবে বলে ব্যাংক একাউন্ট খোলানো হয়েছে। রেজুলেশন দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা নিয়েছে। কমিশনারের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার,ওসি বরাবরসহ মাদরাসা সভাপতি বরাবরও লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সব জায়গা থেকেই আমার থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে, তবে সে টাকা ফেরত দিতে রাজি হচ্ছে না।

অভিভাবক এনায়েত আলী খান বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের তদন্ত সঠিকভাবে হলে আমাদের ছেলে মেয়েদের ন্যায্য দাবি আদায় হবে। এ ধরনের কর্মকান্ড শিক্ষাক্ষেত্রে অশান্তি সৃষ্টি করছে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

যদিও এ বিষয়ে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি, প্রথম কল রিসিভ করে ব্যস্ততার কথা বলে ঘন্টাখানিক পরে কল করতে বললে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি আর কল রিসিভ করেননি।

তদন্ত কর্মকর্তা ও তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব না। প্রতিটি অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *