Spread the love

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটককৃতদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন-ছাত্রলীগের ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক থেকে পদত্যাগকৃত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন ও পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুত্তাকীন সাকিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জালাল আহমেদ। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন।

ছাত্রলীগের ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক থেকে পদত্যাগকৃত শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ (লালবৃত্ত চিহ্নিত)

একটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে বেধড়ক মারধর করছেন।

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, তিন শিক্ষার্থীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেফতার দেখানো হবে।

এদিকে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামের ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে হলের একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। ঘটনা তদন্ত করে আজ সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তি লুকিয়ে হলের মধ্যে ঢুকে পড়েন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ধরে এনে আগের দিন হল থেকে ছয়টি মোবাইলফোন ও মানিব্যাগ চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই যুবক বলেন, যদি তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আসল চোরদের কথা বলবেন। ছাত্ররা তাকে ভাত খাওয়ান। পরে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে শুরু করে দুই ঘণ্টা ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন।

বিষয়টি প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর নানাভাবে নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। কেউ বলছেন, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।

ঢাবির প্রক্টর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলমগীর কবিরকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক জহির রায়হান, মোহাম্মদ মাহাবুব আলম, ড. আসিব আহমেদ, ড. তৌহিদুল ইসলাম ও এ কে এম নূরে আলম সিদ্দিকী।

অপরদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে ওই দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশ। আটক শিক্ষার্থীরা হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জালাল আহমেদ এবং মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের মোহাম্মদ সুমন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *