Spread the love

জহর হাসান সাগর, তালা: তালাসহ বাংলাদেশের সকল হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য সরবরাহে বৈষম্য দূর করতে ভর্তিকৃত সকল রোগীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের জরুরী পত্র জারির দাবি জানানো হয়েছে।  

তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার জানান, তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ভর্তিকৃত রোগীদের দৈনিক ৫০ জনের খাদ্য ও পথ্য সরবরাহ করা যাবে। ৫০ জনের অধিক রোগীর খাদ্য সরবরাহের টাকা সরকার দেয়না। তালা হাসপাতালের মত জনগুরত্বপূর্ণ সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবার মান সন্তোষজনক থাকায় প্রতিদিন বহিঃবিভাগে  শতশত রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং প্রায় শতাধিক রোগী আন্ত বিভাগে পুরুষ ও মহিলা ভর্তি থাকে। দুঃখের বিষয় খাদ্য পায় ৫০ জন। অসহায় চিকিৎসারত বাকী ৫০ জন রোগী খাদ্য পায়না। তাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ১০০ শয্যা চালু করার অনুমতি চেয়ে কয়েক দফা প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তাবের কোন অনুমোদন মেলেনি। সকল ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরী ভিত্তিকে পুনরায় প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে । 

তথ্যমতে, সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু জীবনরক্ষাকারী জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান সরকারী হাসপাতাল। বৃত্তশালী ব্যক্তিরা বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময় সেবা গ্রহণ করেন। কিন্তু হতদরিদ্র দীনমজুর অসহায় মানুষ গুলো সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার উপর নির্ভরশীল। রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ গুলো টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করা প্রয়োজন। প্রতিদিন রোগীপ্রতি তিন বেলা খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ১৭৫/= টাকা । উক্ত বরাদ্দকৃত ১৭৫/= টাকা হতে ভ্যাট ৭.৫০%, আয়কর ৭%, ঠিকাদারের লভ্যাংশ ১০% । সরকারীভাবে ১৭৫/= টাকা বরাদ্দ থেকে শতকরা কর্তন করা হয় প্রায় ২৭% তাহলে ১৭৫ টাকায় কর্তন করা হয় ৫৮/= টাকা। রোগী প্রতি দৈনিক তিন বেলায় খাবার পাচ্ছে ১১৭/= টাকা। তিনবেলা ১১৭ টাকায় চিকিৎসারত রোগীরা কি খাবার পাবে ? হোটেলে এক বেলা ডাল ভাত ডিম খেলে বিল হয় ১০০/=, পোল্টির মাংস খেলে ২০০/= দুইশত টাকা। কিন্তু এই জনগুরুত্বপূর্ণ জীবনরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসারত প্রয়োজনীয় ঔষধ ও সকল ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের এর দিকে সরকারের সুনজর নেই। এখানেও বৈষম্য সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। অদ্য ১৪ সেপ্টেম্বর  তালা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৫ জন। খাদ্য পেয়েছে ৫০ জন। ৩৫ জন অসহায় রোগীরা না খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।  

তালা হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডের ৪ নং বেডে চিকিৎসারত পরপর ৩ বার নির্বাচিত সংরক্ষিত আসনের সদস্য মিসেস সাহিদা বেগম জানান, হাসপাতালে ভর্তিকৃত কোন রোগী খাবার পাচ্ছে আবার কোন রোগী খাবার পাচ্ছেনা। তারা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে খাদ্য না পেয়ে কান্নাকাটি করছে। খুব কষ্টে আছে রোগীরা। 

জনগণের দাবি, চিকিৎসা গ্রহণে ভর্তিকৃত সকল রোগীদের খাদ্য পথ্য সরবারহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধ ক্রয়ের দিক বিশেষ বিবেচনা করা। এবং বাংলাদেশের সকল উপজেলা হাসপাতালে গুলো ১০০ শয্যায় উন্নতি করা। জেলা হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যা চালু করা। রোগী প্রতি দৈনিক সর্বনিম্ন ৩০০/= তিনশত টাকা নির্ধারণ করা। 

মুমুর্ষ্য রোগীদের স্বার্থ বিবেচনা করে মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নজরে আনতে ভর্তিকৃত সকল রোগীদের পথ্যখাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করণ। কেউ খাবে কেউ খাবে না এই বৈষম্য দুর করতে সকল ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের পত্র জারির দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *