Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ২২১জন নতুনভাবে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়। যে কারণে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশকে যক্ষ্মামুক্ত করতেই হবে। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সকলকে কাজ করতে হবে। কেননা ২০৩৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যেতে পারে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব সংস্থার বরাদ্দ।

প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১ কোটির বেশি মানুষ যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ প্রতি বছর মারা যায়। প্রধানত কর্মক্ষম (১৫-৪৫ বছর) জনগোষ্ঠীই যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়। সর্বাধিক যক্ষ্মারোগী থাকা ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। দেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু হয়েছে ১৯৬৫ সালে। এখনো ৩১ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সরকারের একার পক্ষে যক্ষ্মা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তবে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের কাজে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

রোববার(১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা এসব কথা বলেন। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও ব্র্যাক’ এইি ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে। ওরিয়েন্টেশনে বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক-এর জেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার সোহেল রানার সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরহাদ জামিল, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল, ব্র্যাক-এর পিপিএম এসিস্টান্ট শেফালী আক্তার, ঘোনা ইউনিয়ন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুর রহমান, ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর (ডি. বি) মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমাদুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আব্দুল হামিদ বাবু, নজিবুল ইসলাম, শামীমা আক্তার, বাবুলিয়া জেএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক কাজী জাহিদুর রহমান, শিক্ষক আব্দুল হামিদ, মাওলানা আজগর আলী, জুলফিকার আলী, আবু রায়হান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে যক্ষ্মা বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা বেশি, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বছরে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় মারা যান। এত বড় রোগের বোঝা সরকারের একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এজন্য যক্ষ্মা রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। এই সামাজিক আন্দোলনে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবার সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বক্তারা আরও বলেন, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তাদের যক্ষ্মারোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। যেমন-পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু, যারা অপুষ্টিতে ভুগছে, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি যেমন- ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, ক্যান্সার, এইডস, মাদকাসক্ত ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, যক্ষ্মাসেবা প্রদানকারী, ধূমপায়ী, একই ঘরে অনেক লোকের বসবাস, জেলখানা, কলকারখানা, উদ্বাস্তু শিবিরে বসবাস/কাজ করেন এমন ব্যক্তি যক্ষ্মারোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

ওরিয়েন্টেশনে যক্ষ্মা ছাড়াও এইচআইভি-এইডস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, কোভিড-১৯, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *