নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরের শিকড়ি গ্রামের ময়জদ্দিন আহম্মেদ টুলুকে বাড়ি থেকে তুলে এনে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) নিহতের স্ত্রী রহিমা খাতুন বাদি হয়ে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে ২১ জনকে আসামী করে ওই মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্তপূর্বক এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন সাতক্ষীরা থানার তৎকালীন ওসি এমদাদ হোসেন, তৎকালীন এসআই আবুল কালাম আজাদ, তৎকালীন এএসআই আব্দুল মালেক, তালা থানার তৎকালীন এসআই নিয়াজ মোহম্মদ, সাতক্ষীরা সদরের সাতানী গ্রামের শেখ লিয়াকাত আলির ছেলে আরাফাত হোসেন, শিকড়ী গ্রামের আব্দুল হাকিম বিশ্বাসের ছেলে আকতারুল ইসলাম, সাতানী গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে ফরাদ হোসেন, কুশখালী গ্রামের মৃত. সোনাই সরদারের ছেলে ও কুশখালী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী সরদার, বাউকোলা গ্রামের শহিদ মাষ্টারের ছেলে ছাইফুদ্দীন পলাশ, অজেদ আলির ছেলে জামান পান্তি, মৃত ইউনুছ আলির ছেলে ইয়াকুব আলি, ভাদড়া গ্রামের ছাকা দফাদারের ছেলে আয়নুর দফাদার, কাশেমপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেম মোল্যার ছেলে তহিদুল ইসলাম, গোলাম রসুলের ছেলে আব্দুল গফুর, কামার বায়সা (উত্তর পাড়া) গ্রামের আব্দুল লতিফ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন ও ইমাদুল হক, বাউকোলা গ্রামের শওকাত আলীর ছেলে উজ্জল হোসেন, মাধবকাটি গ্রামের এছানুর সরদার, ঘোনা গ্রামের মৃত জবেদ আলির ছেলে মনিরুল ইসলাম, বাঁশদহা গ্রামের নেছার গাজীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, কলারোয়ার ওফাপুর গ্রামের সুদু দাই এর ছেলে গোলাম রসুলসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ এর নেতৃত্বে পুলিশ ও কয়েকজন লোক তিনটি কালো রং এর মাইক্রোবাসে করে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিকড়ি গ্রামের ওমির আলী সরদারে মেয়ে রহিমা খাতুনের স্বামী ময়জদ্দিন আহম্মেদ টুলুর বাড়িতে আসে। এরপর টুলুকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে করে সদর থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে তালা থানাধীন তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৮ মাইল পাকা রাস্তার পূর্ব পার্শ্বের বিশ্বাসপাড়ার রবিউল ইসলামের জমির উপর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। সেখান থেকে তার লাশ সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। ১৬ জানুয়ারি সকালে খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে গেলে ময়না তদন্ত শেষে টুলুর লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে টুলুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। পুলিশ টুলুকে একজন মাদক ব্যবসায়ি হিসেবে প্রচার দিয়ে প্রতিপক্ষের আঘাতে টুলু মৃত্যুবরণ করেছে মর্মে প্রচার দেয়। পুলিশের হুমকিতে নিহতের স্বজনরা তখন মামলা করতে পারেননি। বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকুলে হওয়ায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী এড. জিয়াউর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।