কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: কালিগঞ্জের নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ তোফায়েল আহম্মেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। নিয়োগ বাণিজ্য ও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে শত শত শিক্ষার্থীসহ কলেজের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও কর্মচারীরা এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১ টায় কলেজ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজের প্রধান গেটে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শেখ রনি আহম্মেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বাদশা গাজী।
মানববন্ধনে নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ, সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মোমেনা খানম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জাহিদ হোসেন, আজমীর হোসেন, শাহরিয়ার হোসেন, মুজাহিদুল আলম, মেহেরাব হোসেন ও মারুফ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, তোফায়েল আহম্মেদ ২০২২ সালে কলেজে চারজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট ও একজন অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দিয়ে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নিয়োগকৃত চারজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট প্রত্যেকে ১১ লাখ টাকা হারে ৪৪ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষ তোফায়েল আহম্মেদকে প্রদান করেছেন মর্মে লিখিত স্বীকারেক্তি দিয়েছেন।
এছাড়াও উপবৃত্তির ফরম বিক্রি, পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ কলেজের বিভিন্ন খাত থেকেও লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তোফায়েলের বিরুদ্ধে। মামা নাকক খুঁটির জোরে প্রায় ১৯ মাস আগে কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের জাফরপুরে অবস্থিত কাজী আলাউদ্দীন ডিগ্রী কলেজে সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর গত ২৩ জুন ওই কলেজে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন তোফায়েল আহম্মেদ। তিনি এখন নিয়োগ ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন। এজন্য ঐতিহ্যবাহী নলতা কলেজে অধ্যক্ষ পদে তোফায়েল আহম্মেদের আর থাকার অধিকার নেই।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষে কালিগঞ্জ-সাতক্ষীরা সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যস্ততম এ সড়কের দু’পাশে শত শত গাড়ি আটকে পড়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে আন্দোলনকারীদের অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ জানালে অধ্যক্ষ তোফায়েল আহম্মেদকে পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ তোফায়েল আহম্মেদ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বাদশা গাজী বলেন, সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।