Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সাতক্ষীরার আশাশুনীতে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।

সোমবার দুপুরে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কুড়িকাহুনিয়া অভিমুখী রাস্তায় এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক মিলন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সমাজকর্মী নূরে আলম সিদ্দিকী, সাংবাদিক মাছুম বিল্লাহ, শিক্ষক আলগীর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল খায়ের, ভ্যান শ্রমিক রিয়াসা আলী, মোটর শ্রমিক হাবিবুর রহমান ও মৌসানা খাতুন মছু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, উপজেলার প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়া সড়কটি ভেঙে যাওয়ার ৪ বছরেও সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় সড়কের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। তারা দ্রুত রাস্তাটির সংস্কারের দাবি জানান।

এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনকে ‘ভাত নয়, ত্রাণ নয়, রাস্তা চাই, বাঁচতে চাই’ এমন প্লাকার্ড হাতে নিয়ে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৪ বছর ধরে রাস্তা না থাকায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা, কুড়িকাহুনিয়া, গোকুলনগর, গোয়ালকাটি, সোনাতনকাটি, শ্রীপুরসহ পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সড়কপথে ২০ হাজার মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। অসুস্থ রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।

স্থানীয় সমাজ কর্মী নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। অথচ এখানকার মানুষের দুর্দশার শেষ নেই। কিন্তু উচ্চ পর্যায়ে এই দুর্দশার কথা না পৌঁছানোর কারণে এ থেকে মুক্তি মিলছে না।

ভবানী বিশ্বাস বলেন, রাস্তার পাশেই আমাদের একটি শ্মশান ঘাট ছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় রাস্তার সঙ্গে শ্মশানটিও বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে কেও মারা গেলে অন্য গ্রামে গিয়ে দাহ করতে হয়।

কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের কামাল গাজী বলেন, আমাদের হাট-বাজার, স্কুল মাদরাসা সব রাস্তার ওপাশে। রাস্তা না থাকায় ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় নৌকায় চড়ে। তবে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য মালামাল নিয়ে যেতে পারি না।

স্থানীয় বাসিন্দা মহিনূর গাজী বলেন, এখানে আমার একটা ধান মাড়াইয়ের মিল ছিল। সেই মিলটা ও এই খালে চলে গেছে। নদী ভরাট করে রাস্তা হচ্ছে কিন্তু আমাদের এই সামান্য রাস্তা বানানোর জন্য আজ পর্যন্ত কেউ কোনো ব্যবস্থা নিলো না।

স্থানীয় সংবাদকর্মী মিলন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতার অভাবেই রাস্তাটির এই অবস্থা। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে রাস্তাটির ব্যাপারে অবগত না করার কারণেই এই রাস্তাটি এখনো সংস্কার হয়নি। তিনি রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালি বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ছোট ছোট বরাদ্দ দিয়ে অন্য রাস্তার কাজ করে যাচ্ছি। কুড়িকাহুনিয়ার রাস্তাটি ভেঙে বেশি গভীর হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের বরাদ্দ ছাড়া এই রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এমপি মহোদয়সহ ডিসি স্যারকে জানানো আছে বরাদ্দ পেলে কাজ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *