প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সাতক্ষীরা সদরের বিকে (বৈকারী কুশখালী) ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ক্লিনার ও কাথন্ডা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে তরিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এছাড়া তথ্য গোপন করার অপরাধে ওই বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী শরিফুল ইসলামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিকে ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভা শেষে ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত কওে বিকে ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অহিদ উদ্দীন বলেন, ক্লিনার তরিকুল ইসলাম ও নিরাপত্তা কর্মী শরিফুল ইসলামকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে ম্যানেজিং কমিটির মধ্য থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি এবং কমিটির বাইরের সদস্যদের নিয়ে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য তুহিন হোসেন বলেন, ‘স্কুলের নিরাপত্তা কর্মী শরিফুল ইসলাম আমাকে বলে, ‘আমি স্কুলে এসে তরিকুলকে না পেয়ে স্কুলের সিসি ক্যামেরায় দেখি তরিকুল দ্বোতলায় উঠে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করছে।’ শরিফের কথামতো আমি স্কুলে যেয়ে শুনি প্রধান শিক্ষক সাতক্ষীরায় প্রশিক্ষণে গেছেন। তখন আমি শিক্ষক তোতাবুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তরিকুল ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তবে তরিকুল প্রধান শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে মুচুলিকা দিয়েছে।’ তখন আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন স্কুলে উপস্থিত হলে সকলে সামনে তরিকুল তার অপরাধের কথা স্বীকার করে এবারের মতো ক্ষমা করে দিতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, এতো বড় একটি ঘটনা ঘটার পরও প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির কাউকে কিছু বলেননি। তিনি বড় অংকের টাকা নিয়ে গোপনে গোপনে তরিকুলের কাছ থেকে মুচলিকা নিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া তিনি ওই ছাত্রীর বাড়ি যেয়েও হুমকি দিয়ে এসেছেন বিষয়টি আর কাওকে না বলার জন্য। ওই ঘটনার ১০ দিন পর তরিকুল ইসলামকে শোকজ করা হয় এবং ২ এপ্রিল ম্যানেজিং কমিটির সভা আহবান করা হয়। ম্যানেজিং কমিটির সভায় তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা কর্মী শরিফুল ইসলাম ওই দিন সিসি ক্যামেরা থেকে মোবাইলে ছবি উঠিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অন্যান্য কর্মচারীদের দেখায় এবং সেই ছবি তোতাবুর স্যারকেও দেই। কিন্তু আজকের মিটিং এ শরিফুল ইসলাম ছবি উঠানোর কথা অস্বীকার করায় তাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা করা হয়েছে।
বৈকারী কুশখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ওই ঘটনা জানার পর তরিকুলকে শোকজ করা হয়েছিল। এবং ম্যানেজিং কমিটির মিটিং এর সিদ্ধান্ত মতে তরিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে তথ্য গোপন করায় নিরাপত্তাকর্মী শরিফুল ইসলামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে যারা এখনও বিয়ে করেননি তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিয়ে দেওয়ার জন্য অতি শিঘ্রই তাদের অভিভাবকদের নোটিশ করা হবে।
ম্যানেজিং কমিটির সভায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।